আমাদের সকল পোস্ট ও ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে পেতে ফলো করুন :

Click Here
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি

উমাইয়া বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে? খলিফা সুলাইমানকে আশীর্বাদের চাবি বলা হয় কেন?

জনাব আলী আজম দয়ালু, সদাশয় ও প্রজাবৎসল খলিফা । তিনি চারিত্রিক দিক দিয়ে ছিলেন সরল, অনাড়ম্বর, ধর্মানুরাগী ও কর্তব্যপরায়ণ। তিনি খুলাফায়ে রাশেদিনের আদর্শ ও ইসলামি মূল্যবোধে বিশ্বাসী ছিলেন। কর ব্যবস্থার সংস্কার করে তিনি শিল্প ও ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নতি সাধন করেন। তিনি ভিন্ন মতাবলম্বীদের শাসনকার্যে নিয়োগ করে এক অপূর্ব দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। তার বৈদেশিক নীতি ছিল শান্তি-শৃঙ্খলা ও সংহতি বিধান।

ক. উমাইয়া বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে?
খ. খলিফা সুলাইমানকে আশীর্বাদের চাবি বলা হয় কেন?
গ. উদ্দীপকে কোন উমাইয়া খলিফার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে উক্ত খলিফার বৈদেশিক নীতি পর্যালোচনা করো।

প্রশ্নের উত্তর

ক. উমাইয়া বংশের প্রতিষ্ঠাতা হলেন আমির মুয়াবিয়া।

খ . ইরাকের বন্দিদের মুক্তিদানের জন্য খলিফা সুলায়মানকে আশীর্বাদের চাবি বলা হয়।

উমাইয়া শাসনামলে হাজ্জাজ বিন ইউসুফ কুফা ও বসরায় ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী (রা)-এর অনুসারীদের বিদ্রোহ দমন করে ইরাকের শাসনকর্তা নিযুক্ত হন। সময় তিনি ইরাকের হাজার হাজার মানুষকে বন্দি করে কারাগারে নিক্ষেপ করেন। খলিফা সুলায়মান ক্ষমতায় আরোহণের পর হাজ্জাজের বন্দিকৃত কয়েদিদের মুক্ত করে দেন। এ কারণে তাকে আশীর্বাদের চাবি বলা হয়।

গ. উদ্দীপকে উমাইয়া খলিফা ওমর বিন আবদুল আজিজের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।

উমাইয়া খলিফাদের রাজত্বকালে দেশজুড়ে ক্ষমতা নিয়ে সংঘর্ষ, বিশ্বাসঘাতকতা, ষড়যন্ত্র ও নিষ্ঠুরতায় নিমজ্জিত ছিল। তবে এসব অপকর্ম সৃষ্টিকারী খলিফাদের মধ্যে ব্যতিক্রমধর্মী একজন শ্রেষ্ঠ ও মহান শাসক ছিলেন। তিনি হলেন খলিফা আবদুল আজিজ বা দ্বিতীয় ওমর। তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও কর্মের প্রতিচ্ছবি ̄পষ্ট হয়ে উঠেছে জনাব আলী আজমের চরিত্রের মধ্যে।

জনাব আলী আজম একজন দয়াল, সদাশয় ও প্রজাবৎসল খলিফা চারিত্রিক দিক দিয়ে তিনি ছিলেন সরল, অনাড়ম্বর, ধর্মানুরাগী ও কর্তব্যপরায়ণ। তিনি খুলাফায়ে রাশেদিনের আদর্শ ও ইসলামি মূল্যবোধে বিশ্বাসী ছিলেন। কর ব্যবস্থার সংস্কার করে তিনি শিল্প ও ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নতি সাধন করেন। এছাড়া তিনি ভিন্ন মতাবলম্বীদের শাসনকার্যে নিয়োগ করে এক অপূর্ব দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।

এ ধরনের বৈশিষ্ট্য খলিফা ওমর বিন আবদুল আজিজের ক্ষেত্রেও লক্ষ করা যায় তিনি ছিলেন অনাড়ম্বর ধর্মানুরাগী, কর্তব্যপরায়ণ ও প্রজাবৎসল খলিফা। তিনি খুলাফায়ে রাশেদিনের আদর্শ ও ইসলামি মূল্যবোধে বিশ্বাসী ছিলেন। রাজদ্বব্যবস্থা সংস্কারের ক্ষেত্রে তিনি মাওয়ালিদের (অমুসলিম ক্রীতদাস, যারা পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণ করেছে) জিজিয়া কর (অমুসলিমদের ওপর ধার্যকৃত কর) থেকে রেহাই দেন। প্রশাসনিক কাজের ক্ষেত্রে তিনি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে যোগ্য লোকদের নিয়োগ দেন । সুতরাং বলা যায় যে, উদ্দীপকে উমাইয়া খলিফা ওমর বিন আবদুল আজিজেরই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন : উমাইয়া বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে? কারবালার কাহিনিকে মর্মান্তিক বলা হয় কেন?

ঘ. বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রে উক্ত খলিফা অর্থাৎ ওমর বিন আবদুল আজিজ উদারতার পরিচয় দিয়েছিলেন।

উদ্দীপকে জনাব আলীর বৈদেশিক নীতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে তিনি সবকিছুর ওপরে শান্তি-শৃঙ্খলা ও সংহতি বিধানের ওপর প্রাধান্য দেন। খলিফা ওমর বিন আবদুল আজিজের ক্ষেত্রেও এমনটি উমাইয়া খলিফা ওমর বিন আবদুল আজিজ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাসী ছিলেন। তাই তিনি যুদ্ধাভিযান বা রাজ্য বিজয়ে আকৃষ্ট হননি। তিনি পূর্ববর্তী খলিফাদের প্রেরিত সকল যুদ্ধাভিযান বন্ধ করে দেন।

মুসলিম সেনাপতি মাসলামার নেতৃত্বে যে আরব বাহিনী কনস্টান্টিনোপলের প্রাচীরের পাদদেশে খাদ্য ও রসদের অভাবে আটকা পড়েছিল, তিনি তাদেরকে স্বদেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। উমাইয়া শাসনকর্তা আল হুরের শাসনাধীনে স্পেনে গোলযোগ দেখা দিলে তার পরিবর্তে তিনি আল সামাহকে সেখানকার শাসনকর্তা নিয়োগ করে শান্তি- শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। সামরিক বাহিনীর দুর্বলতার জন্য তিনি বিদেশে অভিযান বন্ধ করেননি, বরং রাজ্যে স্থিতিশীলতা সৃষ্টি এবং ইসলাম প্রচারের প্রতি অধিক মনোযোগী ছিলেন বলেই রাজ্য জয়ের প্রতি তার অনীহা ছিল।

ওমর বিন আবদুল আজিজের বৈদেশিক নীতি সম্পর্কে সমালোচকরা বলে থাকেন যে, রাজ্য জয়ের সংকল্প ত্যাগ করে তিনি সামরিক শক্তি হ্রাস করেন। তাই সেনাবাহিনী পরবর্তীকালে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়। তবে ওমর বিন আবদুল আজিজের বৈদেশিক নীতি রাষ্ট্রের স্বার্থবিরোধী হয়নি। কারণ ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর (রা) এবং উমাইয়া খলিফা ওয়ালিদ ইসলামি রাষ্ট্রের যথেষ্ট বিস্তৃতি সাধন করেন। এরপর রাজ্য বিস্তার নয় বরং রাষ্ট্রের সংহতি রক্ষা ও শাসন ব্যবস্থার সুসংহত্তকরণ অধিক প্রয়োজন ছিল। তাই বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রে ওমর বিন আবদুল আজিজ যথার্থ কাজ করেছেন বলেই প্রমাণিত হয়।

Md. Mahabub Alam

I am a committed educator, blogger and YouTuber and I am striving to achieve extraordinary success in my chosen field. After completing Masters in Anthropology from Jagannath University, I am working as Chief Accounts Officer in a national newspaper of the country. I really want your prayers and love.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button