আমাদের সকল পোস্ট ও ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে পেতে ফলো করুন :

Click Here
পৌরনীতি ও নাগরিকতা

তথ্য অধিকার আইন | তথ্য প্রাপ্তির প্রক্রিয়া | তথ্য প্রদান পদ্ধতি

তথ্য অধিকার আইন : জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে তথ্য অধিকার আইন একটি যুগান্তকারী আইন। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ কর্তৃক গৃহীত তথ্য অধিকার আইনটি ৫ এপ্রিল, ২০০৯ (২২ চৈত্র, ১৪১৫) তারিখে রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করে এবং এ আইনটি সর্বসাধারণের অবগতির জন্য প্রকাশ করা হয়। এ আইনটি চালু হওয়ার পূর্বে যেসব তথ্য গােপন ছিল, এখন জনগণ তা জেনে নিজেদের অধিকার যেমন ভােগ করতে পারবে, তেমনি সেই সব প্রতিষ্ঠানের কাজের উপর নজরদারি স্থাপন করে তাদের কাজকে আরও নিয়মতান্ত্রিক ও সত্যনিষ্ঠ করে তুলতে পারবে।

জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠায় তথ্য অধিকার আইন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই আইনটি সকল নাগরিকের জানা একান্ত প্রয়ােজন। ‘তথ্য’ হচ্ছে কোনাে কর্তৃপক্ষের গঠন, কাঠামাে ও দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড-সংক্রান্ত যেকোনাে স্মারক, বই, নকশা, মানচিত্র, চুক্তি, তথ্য-উপাত্ত, লগ বহি, আদেশ, বিজ্ঞপ্তি, দলিল, নমুনা, পত্র, প্রতিবেদন, হিসাব বিবরণী, প্রকল্প প্রস্তাব, আলােকচিত্র, অডিও, ভিডিও, অঙ্কিত চিত্র, ফিল্ম, ইলেকট্রনিক প্রক্রিয়ায় প্রস্তুতকৃত যেকোনাে ইনস্ট্রমেন্ট, যান্ত্রিকভাবে পাঠযােগ্য দলিলাদি এবং ভৌতিক গঠন ও বৈশিষ্ট্য নির্বিশেষে অন্য যেকোনাে তথ্যবহুল বস্তু বা এর প্রতিলিপি ।

আরো পড়ুন :

 

তবে শর্ত থাকে যে দাপ্তরিক নােট শিট বা নােট শিটের প্রতিলিপি এর অন্তর্ভুক্ত হবে না। ‘তথ্য অধিকার অর্থ কোনাে কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে তথ্য প্রাপ্তির অধিকার। আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে কর্তৃপক্ষের নিকট হতে প্রত্যেক নাগরিকের তথ্য লাভের অধিকার থাকবে এবং কোনাে নাগরিকের অনুরােধের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তথ্য সরবরাহ করতে বাধ্য থাকবে। তথ্য অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রত্যেক কর্তৃপক্ষ যাবতীয় তথ্যের তালিকা এবং সূচি প্রস্তুত করে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করে রাখবে।

যে-সব তথ্য প্রকাশ বা প্রদান বাধ্যতামূলক নয়

তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী বাংলাদেশের নাগরিকদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তথ্য জানার অধিকার থাকলে ও কিছু কিছু তথ্য প্রকাশ বা প্রদান বাধ্যতামূলক নয়। যেমন-

  • বাংলাদেশের নিরাপত্তা, অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি হতে পারে,
  • পররাষ্ট্রনীতির কোনাে বিষয়, যার দ্বারা বিদেশি রাষ্ট্রের অথবা আন্তর্জাতিক কোনাে সংস্থা বা আঞ্চলিক কোনাে জোট বা সংগঠনের সাথে বিদ্যমান সম্পর্ক উন্নয়ন হতে পারে,
  • কোনাে বিদেশি সরকারের নিকট হতে প্রাপ্ত কোনাে গােপনীয় তথ্য
  • কোনাে তৃতীয় পক্ষের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে,
  • কোনাে বিশেষ ব্যক্তি বা সংস্থাকে লাভবান বা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে,
  • প্রচলিত আইনের প্রয়ােগ বাধাগ্রস্ত হতে পারে বা অপরাধ বৃদ্ধি পেতে পারে,
  • জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে বা বিচারাধীন মামলার সুষ্ঠু বিচারকার্য ব্যাহত হতে পারে,
  • কোনাে ব্যক্তির ব্যক্তিগত জীবনের গােপনীয়তা ক্ষুন্ন হতে পারে,
  • কোনাে ব্যক্তির জীবন বা শারীরিক নিরাপত্তা বিপদাপন্ন হতে পারে,
  • আইন প্রয়ােগকারী সংস্থার সহায়তার জন্য কোনাে ব্যক্তি কর্তৃক গােপনে প্রদত্ত কোনাে তথ্য,
  • আদালতে বিচারাধীন কোনাে বিষয় এবং যা প্রকাশে আদালত বা ট্রাইব্যুনালের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে অথবা যা প্রকাশ আদালত অবমাননার শামিল,
  • তদন্তাধীন কোনাে বিষয় যা প্রকাশে তদন্তকাজের বিঘ্ন ঘটতে পারে,
  • কোনাে অপরাধের তদন্তপ্রক্রিয়া এবং অপরাধীর গ্রেফতার ও শাস্তিকে প্রভাবিত করতে পারে,
  • আইন অনুসারে কেবল একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য প্রকাশের বাধ্যবাধকতা রয়েছে,
  • কৌশলগত ও বাণিজ্যিক কারণে গােপন রাখা বাঞ্ছনীয় এরূপ কারিগরি বা বৈজ্ঞানিক গবেষণালব্ধ ফলাফল,
  • কোনাে ক্রয় কার্যক্রম সম্পূর্ণ হওয়ার পূর্বে বা উক্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে সংশ্লিষ্ট ক্রয় বা এর কার্যক্রম সংক্রান্ত,
  • জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিকারহানির কারণ হতে পারে,
  • কোনাে ব্যক্তির আইন দ্বারা সংরক্ষিত গােপনীয় তথ্য,
  • পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বা পরীক্ষায় প্রদত্ত নম্বর সম্পর্কিত আগাম তথ্য ইত্যাদি।

তথ্য প্রাপ্তির প্রক্রিয়া

কোনাে ব্যক্তি এই আইনের অধীন তথ্য প্রাপ্তির জন্য সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট লিখিতভাবে বা ই-মেইলে অনুরােধ করতে পারবেন । উল্লিখিত অনুরােধে যেসব বিষয় উল্লেখ থাকতে হবে, সেগুলাে হলাে

  • অনুরােধকারীর নাম, ঠিকানা, প্রযােজ্য ক্ষেত্রে ফ্যাক্স নম্বর এবং ই-মেইল ঠিকানা,
  • যে তথ্যের জন্য অনুরােধ করা হয়েছে তার নির্ভুল এবং স্পষ্ট বর্ণনা,
  • অনুরােধকৃত তথ্যের অবস্থান নির্ণয়ের সুবিধার্থে অন্যান্য প্রয়ােজনীয় প্রাসঙ্গিক তথ্যাবলি,
  • কোন পদ্ধতিতে তথ্য পেতে আগ্রহী তার বর্ণনা অর্থাৎ পরিদর্শন করা, অনুলিপি নেওয়া, নােট নেওয়া বা অন্য কোনাে অনুমােদিত পদ্ধতি।

তথ্য প্রদান পদ্ধতি

দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অনুরােধ প্রাপ্তির তারিখ থেকে অনধিক ২০ (বিশ) কার্যদিবসের মধ্যে অনুরােধকৃত তথ্য সরবরাহ করবেন। অনুরােধকৃত তথ্যের সাথে একাধিক তথ্য প্রদান ইউনিট বা কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টতা থাকলে অনধিক ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে উক্ত অনুরােধকৃত তথ্য সরবরাহ করতে হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কোনাে কারণে তথ্য প্রদানে অপারগ হলে অপারগতার কারণ উল্লেখ করে আবেদন প্রাপ্তির ১০ (দশ) কার্যদিবসের মধ্যে তিনি অনুরােধকারীকে অবহিত করবেন।

Md. Mahabub Alam

I am a committed educator, blogger and YouTuber and I am striving to achieve extraordinary success in my chosen field. After completing Masters in Anthropology from Jagannath University, I am working as Chief Accounts Officer in a national newspaper of the country. I really want your prayers and love.
Back to top button