100 English Essay For Juniors

দুঃখের মতাে এত বড় পরশপাথর আর নেই

এ পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষের জীবনে রয়েছে সুখ-দুঃখের সহাবস্থান। একটিকে ছাড়া অন্যটিকে মানুষ সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারে না। দুঃখের সংস্পর্শে না এলে মানুষের স্বীয় সত্তা ও অন্তরশক্তি সঠিকভাবে জাগ্রত হয় না। দুঃখের পরশেই মানুষের বিবেক জাগ্রত হয়, মানুষের জীবন হয় মানবিক বােধে আলােকিত, মানুষ হয়ে ওঠে মহানুভব, মহীয়ান। দুঃখই মানুষের সকল দৈন্য দূর করে তাকে খাটি মানুষে পরিণত করে। সুখবিলাসী মানুষ জীবনকে পুরােপুরি উপলব্ধি করতে পারে না। দুঃখে পড়লে মানুষ সুখের যথার্থ মর্ম বুঝতে পারে, জীবনের প্রকৃত সত্যকে উপলব্ধি করতে পারে। দুঃখের দারুণ দহন শেষে মানুষের জীবনে যে সুখ আসে তা অনাবিল ও অতুলনীয়। দুঃখই পারে মানুষের অন্তর্নিহিত মনুষ্যত্ব ও বিবেককে জাগ্রত করতে, মানুষকে খাটি মানুষে পরিণত করতে। দুঃখ মােকাবিলা করার শক্তি দিয়েই মানুষ আপন শক্তির পরিচয় দিতে পারে। পৃথিবীতে মহৎ কিছু অর্জন করতে হলে মানুষকে কষ্ট সইতে হয়। প্রবাদ আছে, কষ্ট ছাড়া কেষ্ট মেলে না। তাই পৃথিবীতে মহামনীষীরা দুঃখকে তুলনা করেছেন পরশপাথরের সঙ্গে। পরশপাথরের ছোয়ায় লােহা যেমন স্বর্ণপিণ্ডে রূপান্তরিত হয়, দুঃখও তেমনি মানুষের জীবনকে নতুন রূপ দেয় ক্লেদ ও গ্লানি থেকে মুক্ত ও নির্মল করে। দুঃখ-কষ্ট ও ত্যাগ-তিতিক্ষা ছাড়া জীবনের স্বর্ণশিখরে আরােহণ অসম্ভব। পৃথিবীর বিখ্যাত মনীষীগণ স্বীয় সাধনার পথে দুঃখকে অন্তর দিয়ে অনুভব করেছিলেন, দুঃখকে বরণ করে নিয়েছিলেন বলেই আজও তাঁরা স্মরণীয়-বরণীয় হয়ে আছেন। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স), যীশু খ্রিস্ট, গৌতম বুদ্ধ প্রমুখ মহান ধর্মবেত্তা দুঃখকে জয় করে খাটি মানুষে পরিণত হয়েছিলেন, কাজ করেছিলেন সমগ্র মানব জাতির কল্যাণের জন্য। বস্তুত মানুষের মনুষ্যত্ব ও অন্তর্নিহিত গুণাবলীর বিকাশের জন্য দুঃখ মানুষের জীবনে পরশপাথরের মতােই কাজ করে।

এই বিভাগের আরো ভাবসম্প্রসারণ :

Related Post