বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে
মূলভাব:
প্রকৃতির সবকিছুরই একটি স্বাভাবিক সৌন্দর্য আছে এবং সেই সৌন্দর্য যথােপযুক্ত পরিবেশেই ও স্বতঃস্ফুর্ত ও আকর্ষণীয়।
সম্প্রসারিত ভাব:
সৌন্দর্য প্রকৃতির এক মহামূল্যবান দান। কোথায় সেই সৌন্দর্য সবচেয়ে নান্দনিক তা প্রকৃতিই নির্ধারণ করে দেয়। নির্দিষ্ট পরিবেশের ব্যত্যয় ঘটলে সৌন্দর্যের স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য নিষ্প্রভ হয়ে যায়। বন্য প্রাণীরা বনেই সুন্দর, পাখি মুক্ত আকাশে। ফুল সুন্দর গাছে, মাছ স্বাভাবিক জলে। কিন্তু বন্য প্রাণীকে লােকালয়ে, পাখিকে খাঁচায়, ফুলকে ফুলদানিতে, মাছকে ডাঙায় রাখলে তাদের জীবনের গতি ব্যাহত হয়, সৌন্দর্যের হানি ঘটে, কখনাে কখনাে জীবননাশের আশঙ্কা তৈরি হয়। এরা প্রত্যাশিত পরিমণ্ডল হারিয়ে নিষ্প্রাণ হয়ে ওঠে। শিশুরও যথার্থ স্থান মায়ের কোল। মায়ের কোলে শিশুকে যতটুকু মানায়, অন্য কোথাও তা সম্ভব নয়। নিজেদের শখ-আহ্লাদ পূরণের জন্য মানুষ কখনাে কখনাে কৃত্রিম পরিবেশ তৈরি করে বন্য প্রাণী, পাখি, মাছ পােষার চেষ্টা করে, কিছুটা হয়তাে সফলও হয়। কিন্তু সেই সব প্রাণীর জীবনের ছন্দ নষ্ট হয়, ব্যাহত হয় যথার্থ বিকাশ। তাই কৃত্রিমতা কখনাে গ্রহণযােগ্য নয়। শুধু প্রাণীর আবাস নয়, মানুষের জীবনেও কৃত্রিমতা কাম্য নয়। কখনাে কখনাে মানুষ মুখােশ পরে তার যথার্থ রূপকে ঢেকে কৃত্রিম আচরণ করে। ময়ূরের পেখম লাগালেই কাক কখনাে ময়ূর হয় না।
সিদ্ধান্ত :
যার যেখানে স্থান, তাকে সেখানেই থাকতে দেওয়া উচিত। প্রকৃত রূপেই সবকিছু সুন্দর, কৃত্রিমতা স্বতঃস্ফূর্ততার অন্তরায়।
এই বিভাগের আরো ভাবসম্প্রসারণ :
- কীর্তিমানের মৃত্যু নাই
- পথ পথিকের সৃষ্টি করে না পথিকই পথ সৃষ্টি করে
- অর্থসম্পত্তির বিনাশ আছে কিন্তু জ্ঞানসম্পদ কখনাে বিনষ্ট হয় না
- অসি অপেক্ষা মসী অধিকতর শক্তিমান
- অনুকরণের দ্বারা পরের ভাব আপন হয় না অর্জন না করলে কোন বস্তুই নিজের হয় না
- অর্থই অনর্থের মূল
- অধর্মের ফল হইতে নিষ্কৃতি নাই
- মানুষের মৃত্যু হলে তবুও মানব থেকে যায়