কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর বনবাণী-তে লিখেছেন— “অনেক কাল পূর্বে শিলাইদহ থেকে কলকাতায় আসছিলেম। কুষ্টিয়া স্টেশন-ঘরের পিছনের দেয়াল-ঘেঁষা এক কুরচি গাছ চোখে পড়ল।… চারিদিকে হাট বাজার; একদিকে রেলের লাইন, অন্যদিকে গোরুর গাড়ির ভিড়, বাতাস ধুলোয় নিবিড়। এমন অজায়গায় পি. ড্যু, ডি র স্বরচিত প্রাচীরের গায়ে ঠেস দিয়ে এই একটি কুরচি গাছ তার সমস্ত শক্তিতে বসন্তের জয় ঘোষণা করছে।…. কুরচির সঙ্গে এই আমার প্রথম পরিচয়।”
বিশ্বকবির সেই কুরচিকে এখন আর সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না। আধুনিক পৃথিবীর মানুষের নানা চাহিদা মেটাতে গিয়ে প্রতিদিনই পৃথিবীর এখানে- ওখানে অসংখ্য প্রাণের বিলুপ্তি ঘটছে, হারিয়ে যাচ্ছে উদ্ভিদের বৈচিত্র্য। প্রাণবৈচিত্র্য কমতে থাকার এই বিষয়টি এখন বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ঘটনাগুলোর একটি। একসময় প্রাকৃতিক পরিবেশে যেসব পরিবর্তন লক্ষ্য করা যেত সেগুলো প্রাকৃতিক নিয়মেই ঘটত।
মানুষের ক্রিয়ার ফল ছিল নিতান্তই নগণ্য। কিন্তু এখন পৃথিবীর জনসংখ্যা ৮শ কোটি ছাড়িয়েছে। অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা ক্রমশই বাড়ছে। পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে জাতিগত দ্বন্দ্ব, বিবাদ, জোরপূর্বক অভিবাসন ও প্রভাব বিস্তারের ফলে নতুন নতুন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। সব মিলিয়ে প্রকৃতি ও পরিবেশের ওপর যেসব নির্যাতন চলছে, তার ফলে কমছে বিপুলা পৃথিবীর প্রাণের অমূল্য বৈচিত্র্য।
উদ্ভিদ, প্রাণী ও ক্ষুদ্র অণুজীবের বিপুল বৈচিত্র্য রয়েছে আমাদের এই পৃথিবীতে। এ-যাবত ১.৭৫ মিলিয়ন প্রজাতি আবিষ্কৃত হয়েছে। এর বেশিরভাগই পোকামাকড়ের মতো ক্ষুদ্র প্রাণী। বিজ্ঞানীদের মতে, বাস্তবে বিশ্বে ১৩ মিলিয়নের বেশি প্রজাতি থাকার সম্ভাবনা। জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে বসবাসকারী সব ধরনের প্রাণী ও উদ্ভিদের যে বৈচিত্র্য, তা একদিনে গড়ে ওঠেনি— শত কোটি বছরে প্রকৃতি ও পরিবেশের নানা মিথস্ক্রিয়ায় আমরা এসব পেয়েছি। মানবজাতি নিজেরাও এই প্রাণবৈচিত্র্য গড়ে তুলতে ভূমিকা রেখেছে । আবার আমরা নিজেরা এর অংশও বটে।
প্রাণবৈচিত্র্য বলতে শুধু বিভিন্ন ধরনের প্রাণী ও উদ্ভিদকে বোঝায় না। এর কয়েকটি দিক রয়েছে। যেমন—
জেনেটিক বৈচিত্র্য : প্রাণীর দেহগঠনের মৌলিক একক হলো জিন। তাই একটি প্রজাতির মধ্যেই জিনগত বৈচিত্র্য থাকতে পারে।
প্রজাতিগত বৈশিষ্ট্য : পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণী ও উদ্ভিদের মধ্যে প্রজাতিগত ভিন্নতা থাকে। এক অঞ্চলের প্রাণবৈচিত্র্যের সঙ্গে অন্য অঞ্চলের একই প্রাণীর বৈশিষ্ট্যে পার্থক্য দৃশ্যমান।
আরো পড়ুন : রবীন্দ্র-নজরুলের স্মৃতিবিজড়িত স্থান
বাস্তুতন্ত্রে ফারাক : মরুভূমি, বন, জলাভূমি, পর্বতমালা, হ্রদ, নদী এবং কৃষিজমির বৈচিত্র্য থেকেও প্রজাতির বৈশিষ্ট্যে পরিবর্তন আসে।
পরিবেশে প্রতিটি প্রজাতির পরস্পরের মিথস্ক্রিয়ায় এই যে পৃথিবী গড়ে উঠেছে, তা বিশ্বকে একটি অনন্য বসতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে ।
প্রাণ ও প্রকৃতির বৈচিত্র্য রক্ষার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য জাতিসংঘ ১৯৯২ সালে International Day for Biological Diversity পালনের ঘোষণা দেয়। প্রথম কয়েক বছর ২৯ ডিসেম্বর এটি পালিত হতো। ২০০০ সালে সিদ্ধান্ত হয় ২২ মে পালনের। প্রতিবছর একটি প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়। এবারের প্রতিপাদ্য : Be Part of the Plan
মানুষের কল্যাণে প্রাণবৈচিত্র্য এবং এ থেকে প্রাপ্ত সেবাসমূহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ওষুধ জেনেটিক সম্পদ থেকে তৈরি হয়, যার বার্ষিক মূল্য ৬৫০ বিলিয়ন পাউন্ড। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এক বিলিয়নেরও বেশি মানুষের মৌলিক খাদ্য মাছ। ১.৬ বিলিয়ন মানুষের জীবনে কাঠসহ অন্যান্য বনজ সম্পদ উপার্জনের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এক বিলিয়ন মানুষ রোগ নিরাময়ের জন্য বনের গাছগাছড়া থেকে তৈরি সামগ্রী ব্যবহার করেন।
জনসংখ্যা বৃদ্ধি, মানুষের ভোগলিপ্সা ও আত্মকেন্দ্রিকতা এবং অপরিকল্পিত উন্নয়নের ফলে অধিকাংশ দেশে প্রাণবৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে। এছাড়া বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি, খরা, দাবানলও প্রাণীদের মৃত্যু বা বিলুপ্ত হওয়ার অন্যতম কারণ। জাতিসংঘের তথ্যমতে, পৃথিবীতে প্রাণের গণবিলুপ্তির ষষ্ঠ পর্যায় শুরু হয়ে গিয়েছে ৭০০ বছর আগেই।
চেনাজানা ২০ লক্ষ প্রাণী ও উদ্ভিদের সাড়ে সাত থেকে ১৩ শতাংশই ইতোমধ্যেই হারিয়ে গিয়েছে চিরতরে। পৃথিবীতে শেষবার প্রাণের গণবিলুপ্তি ঘটেছিল সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে। তখন মাত্র ২৫ লাখ বছরের মধ্যেই বিলুপ্ত হয় ডাইনোসরসহ বহু প্রাগৈতিহাসিক প্রাণী ও উদ্ভিদ। পঞ্চম গণবিলুপ্তির সেই অধ্যায়টি ‘ক্রেটাসিয়াস-টার্সিয়ারি যুগ’ নামে সুপরিচিত ।
প্রকৃতি ও প্রাণবৈচিত্র্য বিষয়ে বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান ‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার’ (আইইউসিএন) ১৯৬৮ সাল থেকে নিয়মিতভাবে লাল তালিকা প্রকাশ করছে। সংস্থার সর্বশেষ হিসাবে, পৃথিবীর ৪০ হাজার প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার মুখে। এগুলোর ৪১ শতাংশ উভচর, ২৬ শতাংশ স্তন্যপায়ী, ১৩ শতাংশ পাখি, ৩৭ শতাংশ হাঙর ও ২১ শতাংশ সরীসৃপ।
প্রাণবিলুপ্তির বিষয়ে সত্যিকার অর্থে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি নিবদ্ধ হয় ১৯৯২ সালে। সে বছর ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে আয়োজিত আর্থ সামিটে বিশ্বনেতারা একত্রিত হন। সেখানে বৈশ্বিক অর্থনীতির উন্নয়ন ও দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য সমন্বিত কৌশল গ্রহণের কথা বলা হয়। সম্মেলনে গৃহীত প্রধান কয়েকটি চুক্তির অন্যতম ছিল ‘কনভেনশন অন বায়োলজিক্যাল ডাইভারসিটি’। এর মাধ্যমে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি বিশ্বের জীববৈচিত্র্য রক্ষার বিষয়ে একমত হয়।
তাছাড়া দু’বছর পরপর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, প্রাণবৈচিত্র্য সুরক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বৈশ্বিকভাবে মন্ত্রী পর্যায়ের জাতিসংঘ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যা কনফারেন্স অব পার্টিস- কপ (COP) নামে পরিচিত। প্রাণবৈচিত্র্য সুরক্ষায় কপের ১৫তম আসরটি বসেছিল ২০২২ সালে কানাডায়। ওই সম্মেলনে প্রায় ২০০টি দেশ ২৩টি লক্ষ্যমাত্রার অঙ্গীকার নিয়ে ‘কুনমিং-মন্ট্রিল বৈশ্বিক প্রাণবৈচিত্র্য কাঠামো’ চূড়ান্ত করে।
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনার লাল রঙের নেকড়ে, ইউরেশিয়া অঞ্চলের বিবর, কালো ভল্লুক, মঙ্গোলিয়ান ঘোড়া— বিশ্বের ভিন্ন ভিন্ন প্রান্তের এসব বন্যপ্রাণীর মধ্যে একটি জায়গায় মিল রয়েছে। প্রতিটি প্রাণী একসময় বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল কিংবা বিলুপ্তির ঝুঁকিতে ছিল। পরে তারা আবারও প্রকৃতিতে ফিরে এসেছে । এর পেছনে বড় কৃতিত্ব প্রকৃতিবিদ ও বিজ্ঞানীদের এবং ক্যাপটিভ ব্রিডিং বা পুনঃপ্রজনন প্রক্রিয়ার ।
দেখা গেছে, ১৯৯৩ থেকে ২০২০- এই ২৮ বছরে পুনঃপ্রজনন প্রক্রিয়ায় ৪৮টির বেশি প্রজাতির পাখি ও স্তন্যপায়ী প্রাণীকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। প্রক্রিয়াটি কার্যকর না হলে বিলুপ্তির এ হার তিন থেকে চার গুণ বেশি হতো। এসব উদ্যোগ ক্ষতিগ্রস্ত প্রাকৃতিক বাস্তুসংস্থানের ব্যবস্থাকে সারিয়ে তুলতে ভূমিকা রাখছে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।
আইইউসিএন-এর ২০১৫ সালের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১৬০০-এর বেশি প্রজাতির প্রাণী রয়েছে, যাদের মধ্যে ৩৯০টি বিলুপ্তির হুমকির মুখে রয়েছে। এগুলো লাল তালিকাভুক্ত। ৫০টির বেশি প্রজাতি রয়েছে বিলুপ্তির ঝুঁকির মধ্যে। দেশের বিপন্ন কয়েকটি প্রাণীর মধ্যে রয়েছে—
হাতি : দেশে যে প্রজাতির হাতি দেখতে পাওয়া যায় সেটি এশিয়ান এলিফ্যান্ট (বৈজ্ঞানিক নাম এলিফাস ম্যাক্সিমাস)। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট ও ময়মনসিংহের পাহাড়ি অঞ্চলে এই হাতি পাওয়া যায়। বিশ্বে এই প্রাণীটি সংকটাপন্ন হিসেবে বিবেচিত হলেও বাংলাদেশে এটি ‘চরম সংকটাপন্ন’ অবস্থায় রয়েছে।
চিতা: বাংলাদেশে চিতা বাঘকে ‘চরম সংকটাপন্ন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে আইইউসিএন। দেশে যে ধরনের চিতা বাঘ পাওয়া যায় সেটিকে ইন্ডিয়ান লেপার্ড বলা হয়, যার বৈজ্ঞানিক নাম প্যান্থেরা পার্ভাস। ২০২১ সালের অনুমান অনুযায়ী বাংলাদেশে চিতার সংখ্যা ৩০ থেকে ৫০টি। দক্ষিণাঞ্চলের পার্বত্য এলাকাগুলোর পাশাপাশি লালমনিরহাট, শেরপুর, কুড়িগ্রামসহ উত্তরাঞ্চলেও চিতা বাঘ দেখতে পাওয়া যায়।
উল্লুক : চার দশক আগেও বাংলাদেশের বনে প্রায় তিন হাজারের মতো উল্লুক বা ওয়েস্টার্ন হুলক গিবন ছিল । ২০২১ সালের হিসাবে সেই সংখ্যা নেমে এসেছে ২০০ থেকে ৩০০-তে ।
ঘড়িয়াল : সত্তরের দশকেও বাংলাদেশ, ভারতসহ পাকিস্তানের সিন্ধু নদী, উত্তর নেপাল ও ভুটানের নদীতে অহরহ দেখা মিলত ঘড়িয়ালের। আইইউসিএনের গবেষণা অনুযায়ী, ২০০০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত পদ্মা, যমুনা, মহানন্দা ও ব্রহ্মপুত্র নদীতে ৫৮ বার ঘড়িয়াল দেখা গেছে।
এছাড়া বনরুই, বনগরু, মেছো বাঘ, বনবিড়ালসহ বিভিন্ন ধরনের ভোঁদড়, বানর, কচ্ছপ বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
আইইউসিএন দেশের চার সহস্রাধিক উদ্ভিদ প্রজাতির মধ্যে এক হাজার প্রজাতি নিয়ে জরিপ করেছে। দেখা যায়, দেশের ৩৯ শতাংশ উদ্ভিদই বিপদাপন্ন। এর ভেতর ৭টি বিলুপ্ত, ৫টি মহাবিপন্ন, ১২৭টি বিপন্ন, ২৬২টি সংকটাপন্ন, ৬৯টি প্রায় সংকটাপন্ন, ২৭১টি প্রকৃতিতে টিকে আছে। এছাড়া ২৫৮টি প্রজাতির ক্ষেত্রে তথ্যের ঘাটতি আছে।
বাংলাদেশে প্রাণী সংরক্ষণের জন্য তথ্য সংগ্রহ বেশি জরুরি। আর এজন্য দরকার শুমারি। দেশে সরকারি উদ্যোগে একমাত্র রয়েল বেঙ্গল টাইগারের শুমারি হয়। বাঘের শুমারি এখনও চলছে। চলিত বছরের ২৯ জুলাই রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা জানা যাবে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের জরিপ অনুযায়ী সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ১১৪। বাংলাদেশ বার্ডস ক্লাব প্রতিবছর জলচর পাখির শুমারি করে। চলতি বছর তারা ৬২টি প্রজাতির ৩৪ হাজার ৩১২টি পাখি গণনা করেছেন। বাংলাদেশের মধ্যে সুন্দরবনই বন্যপ্রাণীর বৃহত্তম আবাস-স্থল। এখানে ৩৭৫ প্রজাতির বেশি বন্যপ্রাণী রয়েছে। ১৯৯২ সালের ২১ মে সুন্দরবনকে রামসার সাইট হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ১৯৯৭ সালের ৬ ডিসেম্বর বনের অভয়ারণ্য এলাকাকে ৭৯৮তম বিশ্বঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করে ইউনেস্কো। বিশ্বঐতিহ্য এলাকাটির মোট আয়তন এক লাখ ৩৯ হাজার ৭০০ হেক্টর।
বাংলাদেশের ২০ হাজার বর্গ কিলোমিটার উপকূলীয় জলাভূমি অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং পরিবেশবান্ধব ভূমিকা পালন করে আসছে। এসব জলাভূমিতে দেড় হাজার প্রজাতির মেরুদণ্ডী প্রাণি, ৭৫০ প্রজাতির পাখি এবং ৫০০ প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়।
তাহিরপুর ও ধর্মপাশা উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ১৮টি মৌজাজুড়ে টাঙ্গুয়ার হাওরের অবস্থান। ৮৮টি গ্রামের প্রায় ৬০ হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা এই হাওরের ওপর নির্ভরশীল। ১৯৯৯ সালে টাঙ্গুয়ার হাওরকে ‘প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা’ ঘোষণা করে সরকার। ১২ হাজার ৬৫৫ হেক্টর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এই হাওর ‘মাদার অব ফিশারিজ’ বা মা হাওর নামে পরিচিত। ২০০০ সালের ২০ জানুয়ারি এই হাওর দেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট ঘোষিত হয়।
মানুষের কল্যাণে প্রাণবৈচিত্র্য এবং এ থেকে প্রাপ্ত সেবাসমূহ নানাভাবে অবদান রাখলেও সবাই যেন প্রাণবৈচিত্র্য নির্মূলের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। টেকসই উন্নয়ন উদ্যোগের অনুপস্থিতির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ও অন্যান্য সঙ্কটকে আরও প্রকট করে তুলেছে জলবায়ু পরিবর্তন। পাশাপাশি, বিভিন্ন সংরক্ষণ ব্যবস্থার সুফলের উদাহরণও রয়েছে। বাংলাদেশকে সে পথে এগুতে হলে এসডিজির আলোকে উদ্যোগ নিতে হবে। তাহলেই সবুজ শ্যামল দেশে পাখিডাকা ফুল-ফোটা দিনে প্রাণী ও মানুষের মিথস্ক্রিয়ায় উন্নয়নের সিঁড়িতে পা রাখব আমরা।
Leave a Comment