চতুর্দশ শতাব্দীতে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল ছিল বাকেরগঞ্জের অধীন। ১৭৯৭ সালে ঢাকা জেলার দক্ষিণাঞ্চল নিয়ে বাকেরগঞ্জ জেলা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৭১ সালে পটুয়াখালী মহকুমা সৃষ্টি হয়। তখন এ মহকুমায় মোট ৫টি থানা ছিল যথা— পটুয়াখালী, মির্জাগঞ্জ, গুলিশাখালী, বাউফল ও গলাচিপা।
বরগুনা ছিল গুলিসাখালী থানাধীন। ১৯০৪ সালে গুলিশাখালী থানাকে আমতলী ও বরগুনা নামে দুটি পৃথক থানা করা হয়। ১ জানুয়ারি ১৯৬৯ পটুয়াখালী জেলা সৃষ্টির সাথে বরগুনা মহকুমা শহর হিসেবে পরিচিত পায়। ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৪ বরগুনা মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করা হয়।
বরগুনা নামের ঐতিহাসিক সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য না পাওয়া গেলেও জানা যায় যে, উত্তরাঞ্চলের কাঠ ব্যবসায়ীরা এ অঞ্চলে কাঠ নিতে এসে খরস্রোতা খাকদোন নদী অতিক্রম করতে গিয়ে অনুকূল প্রবাহ বা বড় গোনের জন্য এখানে অপেক্ষা করত বলে এ স্থানের নাম বড় গোনা।
কারো মতে আবার স্রোতের বিপরীতে গুণ ( দরি) টেনে নৌকা অতিক্রম করতে হতো বলে এ স্থানের নাম বরগুনা। কেউ কেউ বলেন, বরগুনা নামক কোনো প্রতাপশালী রাখাইন অধিবাসীর নামানুসারে বরগুনা। আবার কারো মতে বরগুনা নামক কোনো এক বাওয়ালীর নামানুসারে এ স্থানের নামকরণ করা হয় বরগুনা।
বরগুনার বেতাগী উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নে ঐতিহাসিক বিবিচিনি শাহী মসজিদটি অবস্থিত। ষোড়শ শতকের মাঝামাঝি সময়ে পারস্য থেকে ধর্ম প্রচারের জন্য দিল্লিতে আসেন হজরত শাহ নেয়ামত উল্লাহ নামের এক সাধক। ১৬৫৯ সালে শাহ সুজার আগ্রহে কয়েকজন শিষ্য সঙ্গে নিয়ে নেয়ামত উল্লাহ আসেন বেতাগীর বিবিচিনি গ্রামে । পরে শাহ সুজার অনুরোধে এই গ্রামেই তিনি এক গম্বুজবিশিষ্ট এই মসজিদ নির্মাণ করেন। শাহ নেয়ামত উল্লাহর মেয়ে চিনিবিবির নামানুসারে গ্রামের নামকরণ করা হয় ‘বিবিচিনি” । সেই নাম অনুসারে মসজিদটি বিবিচিনি মসজিদ নামে পরিচিতি পায় । ১৯৯২ সালে এটিকে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়।
শাহজাদা আবদুল মালেক খান (বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী), অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮তম উপাচার্য), মীর সাব্বির (অভিনেতা)।
Leave a Comment