ন্যানোটেকনোলজি কী? ‘মানুষের চিন্তাভাবনা যন্ত্রের মাধ্যমে বাস্তবায়ন সম্ভব'- ব্যাখ্যা করো।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে একটি ভার্চুয়াল ক্লাসরুম স্থাপন করা হয়েছে। ক্লাসরুমটির দরজা খোলার জন্য শুধুমাত্র ঐ বিভাগের কয়েকজন শিক্ষকের আংগুলের ছাপ ব্যবহার করা হয়। এই ক্লাসরুমটি বিশ্বের বিখ্যাত কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমের সাথে সংযুক্ত। ফলে ঐ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো একটিতে ক্লাস চলাকালে এখানকার শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা সরাসরি ঐসকল ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং যেকোনো তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে।

ক. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্ত্বা কী?
খ. জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং কিভাবে মানুষকে সহায়তা করছে ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত দরজায় কোন ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এ প্রযুক্তির সুবিধা অসুবিধাগুলো উল্লেখ কর।
ঘ. “উদ্দীপকে উল্লেখিত একটি প্রযুক্তি গোটা বিশ্বকে হাতের মুঠোয় এনেছে”-উক্তিটির আলোকে তোমার নিজস্ব মতামত ব্যক্ত কর ।

ক. মানুষের চিন্তাভাবনাগুলোকে কৃত্রিম উপায়ে কম্পিউটার বা কম্পিউটার প্রযুক্তিনির্ভর যন্ত্রের মাধ্যমে রূপ দেওয়ার ব্যবস্থাকে Artificial Intellegence বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলা হয়।

খ. যে পদ্ধতির মাধ্যমে মানুষের প্রয়োজনে কোনো জীবের জিনোমের মধ্যে নতুন জিন যোগ করে বা কোনো জিন অপসারণ করে বা পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে জিন বেশি ব্যবহার উপযোগী করা হয়। সেই পদ্ধতিকে জিন প্রকৌশল বা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বলা হয়।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে কোনো জীব বা খাদ্য (ধান, মটর, শিম, টমেটো) থেকে উন্নতমানের জীবে বা চারা উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন নতুন জাতের চারা উৎপাদন করা যাচ্ছে। উচ্চ ফলনশীল বিভিন্ন জীব উৎপন্ন করা যাচ্ছে।

গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত দরজায় যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে তা হলো বায়োমেট্রিক্স। বায়োমেট্রিক্স হচ্ছে এক ধরনের কৌশল বা প্রযুক্তি যার মাধ্যমে মানুষের শারীরিক কাঠামো, আচার-আচরণ, বৈশিষ্ট্য, গুণাগুণ, ব্যক্তিত্ব প্রভৃতি দ্বারা নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে চিহ্নিত বা শনাক্ত করা যায়। বায়োমেট্রিক্স এর মূল কাজই হচ্ছে প্রতিটি মানুষের যে অনন্য বৈশিষ্ট্য আছে তাকে খুঁজে বের করা এবং প্রতিটি মানুষকে সেই বৈশিষ্ট্যের আলোকে পৃথক পৃথকভাবে চিহ্নিত করতে সাহায্য করা। বায়োমেট্রিক্স এর সুবিধা ও অসুবিধা নিম্নে দেওয়া হলো।

বায়োমেট্রিক্স-এর সুবিধা :

১. যেহেতু সিস্টেমটি অনুভূতিহীন, সুতরাং নিরাপত্তার ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্বের সুযোগ নেই এবং নিরাপত্তাও নিখুঁত।
২. প্রাথমিক খরচ বেশি হলেও সার্বিকভাবে খরচ কম।

বায়োমেট্রিক্স-এর অসুবিধা:

১. আলোর প্রতিফলন মুখমন্ডলের ছবির ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে, ফলে মাঝে মাঝে এ সিস্টেমটি মুখমন্ডল চিনতে পারে না।
২. শারীরিক ফিটনেসের ওপর কণ্ঠস্বরের তীব্রতার ওঠানামা হয়। ফলে কোনো কোনো সময় সিস্টেমটি কণ্ঠস্বর ঠিকমতো চিনতে পারে না ।
৩. প্রতিটি স্বাক্ষর একই রকম হয় না ফলে এক্ষেত্রেও সমস্যা হয়।
৪. ইনস্টলেশন খরচ বেশি।
৫. সিস্টেমটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য দক্ষ লোকের প্রয়োজন ।

আরো পড়ুন :

ঘ. উদ্দীপকে উল্লেখিত প্রযুক্তিটি হলো ভিডিও কনফারেন্সিং। টেলিকমিউনিকেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুই বা ততোধিক ভৌগলিক অবস্থানে অবস্থানরত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে কথোপকথন ও পরস্পরকে দেখতে পারার মাধ্যমে আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তাকে ভিডিও কনফারেন্সিং বলে।

এটি একটি আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় এমনকি এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেকোন ব্যক্তি ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে ভিডিও কনফারেন্স করতে পারে। শিক্ষক-ছাত্র, ডাক্তার রোগী, রাজনীতিবিদ জনগণ, গবেষক এমনকি পারিবারিক আত্নীয় স্বজনের সাথে যোগাযোগ এর এটি একটি জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যম।

টেলিমেডিসিন সার্ভিসে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ডাক্তার ও রোগী পরস্পরের সম্মুখীন হয়ে একে অন্যকে দেখে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে পারেন। তাছাড়া অপারেশনের মতো জটিল কাজেও ভিডিও কনফারেন্সিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।

যেহেতু এই প্রযুক্তিতে বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের মধ্যে কথোপকথন ও পরস্পরকে দেখতে পারে ফলে অনুভূতি ও আবেগ এখানে প্রবলভাবে কাজ করে। শুধু তাই নয় বিভিন্ন স্থানের ছবি এখানে জীবন্তভাবে দেখতে পাওয়া যায়। আর এটা সম্ভব শুধু এটি প্রযুক্তি ব্যবহার করেই। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের উল্লেখিত প্রযুক্তিটি বিশ্বকে হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে- উক্তিটি যথার্থ ।

Related Post

Leave a Comment