100 English Essay For Juniors

‘ঙ’ শাসকের রাজত্বকালের অন্যতম সংস্কার ছিল ডাক বিভাগের সংস্কার। তিনি ঘোড়ার গাড়ীতে করে সাম্রাজ্যের এক স্থান হতে অন্য স্থানে ডাক ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। ডাক বিভাগ গোয়েন্দা বিভাগের কাজ সম্পন্ন করত। সমগ্র সাম্রাজ্য হতে সংবাদ প্রধান ডাক কর্মকর্তার নিকট জমা হতো এবং তিনি তা ‘ঙ’ শাসকের কাছে পেশ করতেন। ফলে কোনো স্থানে গোলযোগ দেখা দিলে বা গোলযোগের সম্ভাবনা থাকলে সত্ত্বর তার বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হতো।

ক. কোন উমাইয়া শাসককে রাজেন্দ্র বলা হয়?
খ. ইসলামের পঞ্চম খলিফা বলা হয় কাকে এবং কেন?
গ. কোন উমাইয়া শাসকের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে উদ্দীপকের ‘ঙ’ শাসক ডাক বিভাগের সংস্কার করেন? ব্যাখ্যা কর ।
ঘ, উক্ত শাসকের রাজত্বকাল উমাইয়া বংশের সবচেয়ে গৌরবময় যুগ- বিশ্লেষণ কর।

ক. উমাইয়া খলিফা আব্দুল মালিককে রাজেন্দ্র বলা হয়।

খ. খলিফা ওমর বিন আব্দুল আজিজ উমাইয়া শাসনামলে খুলাফায়ে রাশেদিনের শাসনব্যবস্থা চালু করায় তাকে ইসলামের পঞ্চম ধার্মিক খলিফা বলা হয়। উমাইয়া খলিফাগণের শাসনব্যবস্থা ছিল ষড়যন্ত্র, বিশ্বাসঘাতকতা ও নিষ্ঠুরতায় পরিপূর্ণ। খলিফা ওমর বিন আব্দুল আজিজ অপরাপর উমাইয়া খলিফাদের ষড়যন্ত্র বিশ্বাসঘাতকতা ও নিষ্ঠুরতা পরিহার করে প্রজাদের কল্যাণে শাসন পরিচালনা করেন। এমনকি নিজের স্ত্রীর গহনাদিও রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করেন। ন্যায়পরায়ণ ও ধার্মিক শাসক হিসেবে তিনি ইসলামের ইতিহাসে বিশেষ স্থান দখল করে আছেন। এসব কারণে তাকে পঞ্চম ধার্মিক খলিফা বলা হয় ।

গ. উমাইয়া খলিফা আব্দুল মালিকের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে উদ্দীপকের ‘ঙ’ শাসক ডাক বিভাগের সংস্কার করেন। উমাইয়া খলিফা আব্দুল মালিক ক্ষমতায় আরোহণের পর শাসন সংস্কারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন । তিনি ডাক বিভাগের সংস্কার করে এ বিভাগের উন্নয়ন সাধন করেন। যেটি দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে উদ্দীপকের ‘ঙ’ শাসক ডাক বিভাগের সংস্কার করেন।
উমাইয়া খলিফা আব্দুল মালিকের শাসনামলে ডাক বিভাগের ব্যাপক সংস্কার সাধিত হয়।

তিনি পারসিকদের পদ্ধতি অনুসরণ করে ডাক চালান প্রথার প্রচলন করেন। সাম্রাজ্যের বড় বড় রাস্তার পাশে তিনি ডাকচৌকি নির্মাণ করেন। ডাক বিভাগের কাজ ছিল- ১. সরকারি চিঠিপত্র ও আদেশ নিষেধ আদান-প্রদান; ২. সরকারি কর্মচারীদের ডাকগাড়ির মাধ্যমে স্থানান্তর; ৩. প্রয়োজনে যুদ্ধক্ষেত্রে দ্রুত সৈন্য ও রসদ দ্রব্যাদি সরবরাহ এবং ৪. গোয়েন্দা বিভাগের কাজ সম্পাদন।

উল্লিখিত কাজের জন্য ডাক বিভাগকে খলিফার কান এবং চোখ বলা হতো। উদ্দীপকের ‘ঙ’ শাসকও ডাক বিভাগের সংস্কার করেন। এই বিভাগের মাধ্যমে তিনি সাম্রাজ্যে গোলাযোগের সম্ভাবনা থাকলে সত্ত্বর ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন। আর এভাবেই তিনি আব্দুল মালিকের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে ডাক বিভাগের সংস্কার করেন।

আরো পড়ুন : উমাইয়া খিলাফতের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা কাকে বলা হয়? খলিফা আব্দুল মালিক কীভাবে শাসনব্যবস্থা আরবীয়করণ করেন?

ঘ. উক্ত শাসক তথা আব্দুল মালিকের রাজত্বকাল উমাইয়া বংশের সবচেয়ে গৌরবময় যুগ- উক্তিটি যথার্থ।

উমাইয়া খলিফা আব্দুল মালিক ক্ষমতা লাভ করেই বিভিন্ন বিদ্রোহ দমন করেন। এরপর তিনি সাম্রাজ্য বিস্তারে মনোযোগ দেন। তিনি মধ্য এশিয়ায় এবং বাইজান্টাইনে উমাইয়া সাম্রাজ্যের সীমা বৃদ্ধি করেন। সর্বোপরি শাসন সংস্কার করে উমাইয়া বংশের গৌরবময় যুগের সূচনা করেন।

উমাইয়া খলিফা আব্দুল মালিক সিংহাসনে আরোহণের পর খিলাফত সুদৃঢ় ও সংহত করার জন্য প্রশাসনে ব্যাপক সংস্কার সাধন করেন। খুলাফায়ে রাশেদিনের সময় রাষ্ট্রের কাজকর্মে এবং দলিলপত্র সংরক্ষণে স্থানীয় ভাষা ব্যবহার করা হতো। সাম্রাজ্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এতে নানা কাজে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো। তাই আব্দুল মালিক আরবিকে রাষ্ট্রীয় ভাষার মর্যাদা প্রদান করেন।

আরবি ভাষা লিখন ও পঠনের সুবিধার্থে আব্দুল মালিক হাজ্জাজ বিন ইউসুফের সহযোগিতায় আরবি বর্ণে সর্বপ্রথম নোকতা ও হরকতের প্রচলন করেন। ইতোপূর্বে মুসলিম সাম্রাজ্যে রোমান, পারসিক, হিমারীয় প্রভৃতি মুদ্রা প্রচলিত ছিল । একক মুদ্রা সাম্রাজ্যে না থাকার জন্য আর্থিক লেনদেন এবং ব্যবসা বাণিজ্যের অসুবিধা হতো। এ অসুবিধাসহ দূর করার জন্য আব্দুল মালিক দামেস্কে একটি জাতীয় টাকশাল নির্মাণ করেন।

খলিফা আব্দুল মালিক পারসিকদের পদ্ধতি অনুযায়ী প্রশাসনে ডাক বিভাগের প্রচলন করেন । রাস্তায় রাস্তায় খবর আদান-প্রদান, সৈন্য ও রসদ সরবরাহের জন্য চৌকি স্থাপন করেন। খলিফার আদেশ, নিষেধ, দলিল-দস্তাবেজ, চুক্তিপত্র, নথিপত্র সংরক্ষণের জন্য প্রশাসনে রেজিস্ট্রি বিভাগের সংস্কার করেন। খলিফা আব্দুল মালিক বিচার বিভাগের প্রতিষ্ঠা ও সংস্কার সাধন করে সাম্রাজ্যে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেন ।

উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, আব্দুল মালিকের রাজত্বকাল উমাইয়া বংশর সবচেয়ে গৌরবময় যুগ।

Related Post

Leave a Comment