আমাদের সকল পোস্ট ও ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে পেতে ফলো করুন :

Click Here
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কী? প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্যক্তি সনাক্তকরণ সম্ভব ব্যাখ্যা করো।

ডঃ মিজান তার শারীরিক সমস্যার জন্য ইন্টারনেটে একজন বিদেশী ডাক্তারের পরামর্শ নেন। তিনি ইন্টারনেট থেকে জানতে পারলেন এক ধরনের প্রযুক্তির কল্যাণে এখন ক্যালেন্ডারের পাতার মতো পাতলা টেলিভিশন তৈরি সম্ভব হচ্ছে।

ক. ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কী?
খ. প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্যক্তি সনাক্তকরণ সম্ভব ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের চিকিৎসা পদ্ধতি সুবিধাজনক- ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের টেলিভিশন তৈরির প্রযুক্তিটি বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবহার হচ্ছে- বিশ্লেষণ করো।

ক. প্রকৃত অর্থে বাস্তব নয় কিন্তু বাস্তবের চেতনা উদ্রেককারী বিজ্ঞাননির্ভর কল্পনাকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা অনুভবে বাস্তবতা কিংবা কল্পবাস্তবতা বলে।

খ. প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্যক্তি সনাক্তকরণের প্রযুক্তিটি হচ্ছে বায়োমেট্রিক্স। বায়োমেট্রিক্স হলো এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে কোন ব্যক্তির দেহের গঠন ও আচরণগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে তাকে অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত করা হয়। বায়োমেট্রিক্স এর সাহায্যে মানবদেহের অদ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য সনাক্ত এবং বিশ্লেষণ করা যায়। অর্থাৎ মানুষের কিছু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বা স্বভাব, গুণাগুণ ব্যবহার করে মানুষকে চিহ্নিত করা যায় বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি ব্যবহার করে ।

গ. উদ্দীপকের চিকিৎসা পদ্ধতিটি হলো টেলিমেডিসিন । ভিডিও কনফারেন্সিং, ইন্টারনেট ইত্যাদি প্রযুক্তির সাহায্যে বহু দূরবর্তী স্থান থেকেও চিকিৎসা সুযোগ প্রদান ও গ্রহণ করাকে টেলিমেডিসিন বলা হয়। দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ইতোমধ্যেই উন্নতমানের টেলিমেডিসিন সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে যেখান থেকে নিয়মিতভাবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কর্তৃক উন্নত চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন রোগীরা।

পাশাপাশি বিভিন্ন উপজেলা হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ ও ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ওয়েব ক্যামেরা প্রদান করা হয়েছে। ফলে নিম্ন পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হওয়া রোগীদের জন্য উচ্চ পর্যায়ের হাসপাতালসমূহে কর্মরত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ নেয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের হাসপাতালে এই সেবা চালুর ফলে রোগীদের একদিকে যেমন দূরবর্তী স্থানে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ছে না, তেমনি দরিদ্র রোগীরা কম খরচেই উন্নত চিকিৎসাসেবার সুযোগ গ্রহণ করতে পারছেন। সুতরাং টেলিমেডিসিন চিকিৎসা পদ্ধতি একটি সুবিধাজনক পদ্ধতি ।

আরো পড়ুন :

ঘ. উদ্দীপকের টেলিভিশন তৈরির প্রযুক্তিটি হলো ন্যানোটেকনোলজি । ন্যানোটেকনোলজি হলো এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে ন্যানোমিটার স্কেলে একটি বস্তুকে নিপুণভাবে ব্যবহার করা যায় অর্থাৎ এর পরিবর্তন, পরিবর্ধন, ধ্বংস বা সৃষ্টি করা যায়। ন্যানোপ্রযুক্তি (ন্যানোটেকনোলজি বা সংক্ষেপে ন্যানোটেক) পদার্থকে আণবিক পর্যায়ে পরিবর্তন ও নিয়ন্ত্রণ করবার বিদ্যা।

সাধারণত ন্যানোপ্রযুক্তি এমন সব কাঠামো নিয়ে কাজ করে যা অন্তত একটি মাত্রায় ১০০ ন্যানোমিটার থেকে ছোট । ন্যানোপ্রযুক্তি বহুমাত্রিক, এর সীমানা প্রচলিত সেমিকন্ডাকটর পদার্থবিদ্যা থেকে অত্যাধুনিক আণবিক স্বয়ং-সংশ্লেষণ প্রযুক্তি পর্যন্ত; আণবিক কাঠামোর নিয়ন্ত্রণ থেকে নতুন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ন্যানোপদার্থের উদ্ভাবন পর্যন্ত বিস্তৃত।

ন্যানোপ্রযুক্তির ব্যবহার চিকিৎসাবিজ্ঞান, ইলেকট্রনিক্স, শক্তি উৎপাদনসহ বহু ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে। ন্যানোটেকনোলজির ব্যবহার:

  • কম্পিউটিং-এর ক্ষেত্রে: প্রসেসর উন্নয়নে তথা এর উচ্চ গতি, দীর্ঘ স্থায়িত্ব, কম শক্তি খরচ কম্পিউটারের মেমোরি, গতি দক্ষতা ইত্যাদি বৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • খাদ্য শিল্প: খাদ্যজাত দ্রব্যের প্যাকেজিং তৈরিতে, খাদ্যে ভিন্নধর্মী স্বাদ তৈরিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের ন্যানোম্যাটেরিয়াল তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
  • চিকিৎসা বিভিন্ন ধরনের স্মার্ট ড্রাগ তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে যা সেবনে রোগীরা দ্রুত আরোগ্য লাভ করবে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা যাবে। এই প্রযুক্তির ফলে ক্যান্সার আক্রান্ত কোষে আরো সুক্ষভাবে ওষুধ পৌঁছে যাবে।
  • যোগাযোগের ক্ষেত্রে: হালকা ওজনের ও জ্বালানি সাশ্রয়ী বাহন তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ।
  • জ্বালানি ক্ষেত্রে; সস্তা ও উন্নত মানের সোলার এনার্জি তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ।
  • রাসায়নিক শিল্পে; ইস্পাতের চেয়ে ১০০ গুণ বেশি শক্তিশালী মেটাল তৈরি, টিটানিয়াম ডাই অক্সাইড তৈরির কাজে, বিভিন্ন বস্তুর ওপর প্রলেপ তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়।
  • ইলেকট্রনিক্স শিল্পে: নূন্যতম বিদ্যুৎ খরচ, ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতির ওজন ও আকৃতি কমিয়ে এবং কার্যক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষে এই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। ন্যানো প্রযুক্তি দ্বারা তৈরি ব্যাটারি, ফুয়েল সেল, সোলার সেল ইত্যাদির মাধ্যমে সৌরশক্তিকে অধিকতর কাজে লাগানো যাবে। তাছাড়া ন্যানো ট্রানজিস্টর, ন্যানো ডায়োড, প্লাজমা ডিসপ্লে ইত্যাদি ব্যবহারের ফলে ইলেকট্রনিক্স জগতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হচ্ছে এবং কোয়ান্টাম কম্পিউটিং বিকশিত হচ্ছে।
  • খেলাধুলা ও ক্রিয়া সরঞ্জাম তৈরিতে: ক্রিকেট ও টেনিস বলের স্থায়ীত্ব বৃদ্ধির জন্য, বাতাসে গলফ বলের পজিশন ঠিক রাখার জন্য এটি ব্যবহৃত হয় ।
  • সোলার সেল তৈরি: সিলিকন ন্যানোওয়্যার দ্বারা সোলার সেল তৈরি করা হয়। ন্যানোচিপ ও মনিটর তৈরিতে: ভবিষ্যৎ কম্পিউটার চিপ তৈরি করার জন্য কার্বন ন্যানোটিউব ট্রানজিস্টর ব্যবহার করা হয় এবং কার্বন ন্যানোটিউব দ্বারা প্যানেল মনিটর তৈরি করা হয়।

Md. Mahabub Alam

I am a committed educator, blogger and YouTuber and I am striving to achieve extraordinary success in my chosen field. After completing Masters in Anthropology from Jagannath University, I am working as Chief Accounts Officer in a national newspaper of the country. I really want your prayers and love.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button