শরীয়তপুর

ইতিহাস সমৃদ্ধ বিক্রমপুরের দক্ষিণাঞ্চল এবং প্রাচীন বরিশালের ইদিলপুর পরগণার কিছু অংশ নিয়ে বর্তমান শরীয়তপুর জেলা গঠিত। পদ্মার পললে গড়া, মেঘনার মায়ায় ঘেরা, কীর্তিনাশা, পালং, আড়িয়াল খাঁ, জয়ন্তী ইত্যাদি নদীর জলে জড়ানো ঢাকা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল বর্তমান শরীয়তপুর জেলার রয়েছে প্রাচীন ও সমৃদ্ধ ইতিহাস।

ইতিহাস সমৃদ্ধ বিক্রমপুরের দক্ষিণাঞ্চল এবং প্রাচীন বরিশালের ইদিলপুর পরগণার কিছু অংশ নিয়ে বর্তমান শরীয়তপুর জেলা গঠিত। শরীয়তপুর জেলা পূর্বে বৃহত্তর বিক্রমপুর এর অংশ ছিল। ১৮৬৯ সালে প্রশাসনের সুবিধার্থে এ অঞ্চলকে বাকেরগঞ্জ জেলার অংশ করা হয়। কিন্তু এ অঞ্চলের জনগণের আন্দোলনের মুখে ১৮৭৪ সালেই মাদারীপুর মহকুমার অন্তর্গত করে ফরিদপুর জেলার অংশ হিসেবে গ্রহণ করা হয়।

স্বাধীনতার পর ১৯৭৬ সালে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় মাদারীপুরের পূর্বাঞ্চল নিয়ে একটি নতুন মহকুমা গঠিত হবে। ১০ আগস্ট ১৯৭৭ রেডিওতে সরকার কর্তৃক মহকুমা গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয় এবং ঐ বছরের ৩ নভেম্বর এ মহকুমার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয় । ৭ মার্চ ১৯৮৩ জেলা গঠনের ঘোষণা হয়। ১ মার্চ ১৯৮৪ শরীয়তপুর জেলা হিসেবে স্বীকৃতি পায় ।

নামকরণ

বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক ও ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেতা হাজী শরীয়তুল্লাহর নামানুসারে শরীয়তপুর নামকরণ করা হয়।

সাধারণ তথ্যাবলি

  • প্রতিষ্ঠা : ১ মার্চ ১৯৮৪
  • সীমানা: উত্তরে পদ্মা নদী ও মুন্সিগঞ্জ, দক্ষিণে বরিশাল, পূর্বে মেঘনা নদী ও চাঁদপুর এবং পশ্চিমে মাদারীপুর জেলা
  • আয়তন : ১,১৭৪.০৫ বর্গ কিমি
  • জনসংখ্যা : ১২,৯৪,৫৬২ জন
  • জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার : ১.০১%
  • সাক্ষরতা (৭ বছর ও তদূর্ধ্ব) : ৭২.৯০% → ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) : ১১০৩ জন
  • প্রধান নদনদী : পদ্মা, মেঘনা, দামুদিয়া, আড়িয়াল খাঁ, কীর্তিনাশা, বিণোদপুর, পালং ও জয়ন্তী নদী।

প্রশাসনিক কাঠামো

  • উপজেলা : ৬টি– শরীয়তপুর সদর, জাজিরা, গোসাইরহাট, ডামুড্যা, নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ
  • থানা : ৮টি
  • পৌরসভা : ৬টি— শরীয়তপুর সদর (পালং), জাজিরা, নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা ও গোসাইরহাট
  • ইউনিয়ন : ৬৫টি
  • জাতীয় সংসদের আসন : ৩টি

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব

মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আব্দুর রাজ্জাক, ঔপন্যাসিক আবু ইসহাক, সাবেক ডেপুটি স্পীকার কর্নেল (অব:) শওকত আলী, ভাষা সৈনিক ডাক্তার গোলাম মাওলা, স্বাধীনতা সংগ্রামী পুলিন বিহারী দাস, গীতিকার অতুল প্রসাদ সেন, সাবেক উপদেষ্টা এম আজিজুল হক, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, ভাস্কর্য শিল্পী আব্দুর রাজ্জাক ও বৈজ্ঞানিক গোপাল চন্দ্ৰ ভট্টাচাৰ্য্য।

[box type=”info” align=”” class=”” width=””]জেলা ব্র্যান্ডিং : সোনালি সেতুর শ্যামল ভূমি শরীয়তপুর[/box]

শরীয়তপুর জেলায় পর্যটন সম্ভাবনাকে কেন্দ্র করে জেলা ব্র্যান্ডিং এর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আত্ম-মর্যাদার প্রতীক পদ্মা সেতুকে এখানে ‘সোনালি সেতু’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় এবং শরীয়তপুর জেলা প্রকৃত পক্ষে কৃষি সমৃদ্ধ জেলা হওয়ায় শ্যামল ভূমি শব্দ দুটি ব্যবহার করা হয়েছে।

জানেন কি : শরীয়তপুর

  • আয়তনে : দেশের ৫৩তম
  • ঢাকা বিভাগের : ৮ম
  • জনসংখ্যায় : দেশের ৫০তম
  • ঢাকা বিভাগের : ১১তম
  • সাক্ষরতায় : দেশের ৩১তম

মুক্তিযুদ্ধে শরীয়তপুর

  • সেক্টর > ২নং
  • ১৪ আগস্ট : জাজিরা
  • ৫ সেপ্টেম্বর : নড়িয়া
  • ১০ অক্টোবর : ভেদরগঞ্জ
  • ১০ নভেম্বর : ডামুড্যা
  • ১৪ নভেম্বর : গোসাইরহাট
  • ১০ ডিসেম্বর : শরীয়তপুর সদর

উল্লেখযোগ্য স্থাপনা ও দর্শনীয় স্থান

  • সদর : বুড়ির হাট মসজিদ, বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু-৭, ধানুকার মনসা বাড়িরুদ্রকর মঠ ।
  • নড়িয়া : মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডম, হযরত মজিদ শাহ (রহ.)-এর মাজার- সুরেশ্বর দরবার শরীফ, মোঘল রামসাধুর আশ্রম, সেনাপতি রাজা মানসিংহের দুর্গ (ফতেহজংপুর দুর্গ)।
  • ভেদরগঞ্জ : মহিষারের দীঘি জেড এইচ সিকদার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাহাদুল খলিলুর রহমান সিকদারের বাসস্থান ।
  • জাজিরা : পদ্মা সেতু

Related Post

Leave a Comment