টুকরো সংবাদ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু মুসলমান রােহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন এখন বিশ্ব সংবাদমাধ্যমগুলাের শিরােনাম। কিন্তু রােহিঙ্গাদের ইতিহাস সম্পর্কে আমরা কতটুকু জানি? রােহিঙ্গা জাতির প্রায় ভুলে যাওয়া ইতিহাসের কিছু তথ্য তুলে ধরা হলাে :

  • রােহিঙ্গাদের আবাসভূমি আরাকান ছিল স্বাধীন রাজ্য। ১৭৮৪ সালে বার্মার রাজা বােডপায়া । এটি দখল করে বার্মার অধীন করদ রাজ্যে পরিণত করেন।
  • আরাকান রাজদরবারে কাজ করতেন অনেক বাঙালি মুসলমান। বাংলার সঙ্গে আরাকানের ছিল গভীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক।
  • ধারণা করা হয়, রােহিঙ্গা নামটি এসেছে। আরাকানের রাজধানীর নাম ম্রোহং থেকে : রােহং>রােয়াং>রােয়াইঙ্গিয়া>রােহিঙ্গা। তবে। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে আরাকানকে ডাকা হতাে রােসাং নামে।
  • ১৪০৬ সালে আরাকানের ম্রাউক-উ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা নরমিখলা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে বাংলার তৎকালীন রাজধানী গৌড়ে পলায়ন করেন। গৌড়ের শাসক জালালুদ্দিন শাহ নরমিখলার সাহায্যে ৩০ হাজার সৈন্য পাঠিয়ে বর্মি রাজাকে উৎখাতে সহায়তা করেন। নরমিখলা মােহাম্মদ সােলায়মান শাহ নাম নিয়ে আরাকানের সিংহাসনে বসেন। ম্রাউক-উ রাজবংশ ১০০ বছর আরাকান শাসন করে।
  • মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যচর্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল রােসাং রাজদরবার। মহাকবি আলাওল রােসাং দরবারের রাজকবি ছিলেন। তিনি ‘পদ্মাবতী’ মহাকাব্য লিখেছিলেন। এ ছাড়া ‘সতী ময়না ও লাের-চন্দ্রানী’, ‘সয়ফুলমুল বদিউজ্জামাল’, ‘জঙ্গনামা’ প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থ রচিত হয়েছিল রােসাং রাজদরবারের আনুকূল্যে।
  • ভাই আওরঙ্গজেবের সঙ্গে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে। পরাজিত হয়ে মােগল যুবরাজ শাহ সুজা ১৬৬০ সালে সড়কপথে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার হয়ে আরাকানে পালিয়ে যান। তকালীন রােসাং রাজা চন্দ্র সুধর্মা বিশ্বাসঘাতকতা করে শাহ সুজা এবং তার পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। এরপর আরাকানে যে দীর্ঘমেয়াদি অরাজকতা সৃষ্টি হয়, তার অবসান ঘটে বার্মার হাতে আরাকানের স্বাধীনতা হরণের মধ্য দিয়ে।

Related Post

Leave a Comment