যে ৫ কারণে ফিনল্যান্ডে পড়বেন

পৃথিবীর অন্যতম সুখী দেশ হিসেবে পরিচিত উত্তর ইউরোপের নরডিক দেশ ফিনল্যান্ড। ফিনিশ ভাষায় ফিনল্যান্ডকে বলা হয় ‘সুওমি’ (Suomi)। ‘সুওমি’ শব্দের অর্থ ‘হ্রদ ও দ্বীপভূমির দেশ’। দেশটির শিক্ষাব্যবস্থা বিশ্বমানের। তাই উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বিদেশি শিক্ষার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে দেশটি। যে ৫ কারণে দেশটি শিক্ষার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে তা হলো—

শান্তিপূর্ণ দেশ

ফিনল্যান্ড একটি কল্যাণমুখী রাষ্ট্র। তাই বেকার, অসুস্থ, অক্ষম ও বৃদ্ধদের রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়। দেশটি সুইডেন, নরওয়ে ও রাশিয়ার প্রতিবেশি। বেকারত্বের হার মাত্র ৮.৭ শতাংশ। সমাজের মূল শক্তি হলো সমতা। “The World Happiness Report’ অনুযায়ী টানা ৬ বছর ধরে বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশের তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ফিনল্যান্ড ।

সেরা উচ্চশিক্ষা

ফিনল্যান্ডের প্রায় সবগুলো উচ্চশিক্ষা প্ৰতিষ্ঠানই সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত। সময়োপযোগী কোর্স- কারিকুলাম ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার জন্য এদেশের ডিগ্রি সারাবিশ্বেই ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়ে থাকে ।

  • ফিনল্যান্ডে রয়েছে দুই ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একটি ধরনকে বলা হয় বিশ্ববিদ্যালয়। অন্যটি হলো ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্স। অটাম ও স্প্রিং— এই দুই সেমিস্টার পদ্ধতিতে চলে শিক্ষাকার্যক্রম। স্প্রিং সেমিস্টার জানুয়ারি থেকে জুলাই এবং অটাম সেমিস্টার আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ।
  • বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তিন ধরনের স্কলারশিপ আছে। ৫০ শতাংশ টিউশন ফি মওকুফ, ১০০ শতাংশ টিউশন ফি মওকুফ এবং ফিনল্যান্ড স্কলারশিপ, যাতে ১০০ শতাংশ টিউশন ফি মওকুফসহ জীবনযাত্রার খরচ বহনের জন্য ৫ হাজার ইউরো দেওয়া হয় ।
  • পড়াশোনা শেষ করার পর দুই বছরের ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া যায়। চার বছর বসবাসের পর স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করা যায়। শেনজেন ভিসা সুবিধার মাধ্যমে শেনজেনভুক্ত দেশগুলোতে ভ্রমণ করা যায়। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবহন খরচে ছাড় দেওয়া হয় এবং বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় রয়েছে বিপুল ছাড় ।

বৃত্তির সুযোগ

এখানে মাস্টার্স করার পর ডক্টরাল কোর্সের জন্য আবেদন করলে বৃত্তি পাওয়া অনেকটা সহজ হয়ে যায়। ফিনল্যান্ডের দুটি বৃত্তি সবচেয়ে জনপ্রিয়। এগুলো হলো—

  • ফিনল্যান্ড বৃত্তি : ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইউরোপীয় ইকোনমিক জোনের বাইরের দেশগুলোর মেধাবী শিক্ষার্থীদের এটি দেওয়া হয়।
  • ফিনল্যান্ড ডক্টরাল ফেলোশিপ: এ ফেলোশিপও ইইউ বা ইইউ-এর বাইরের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য। গবেষণা ও কলাভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ডক্টরাল অধ্যয়নের জন্য এ ফেলোশিপ দেয়। এতে শিক্ষার্থীদের ভাতা দেওয়ার পাশাপাশি জীবনযাত্রার জন্য ২ হাজার ইউরো প্রদান করা হয় ।

ভাষা

ফিনিশ ও সুইডিশ এদেশের রাষ্ট্রভাষা। তবে ইংরেজির ব্যবহার হয় সর্বত্র। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তিনটি ভাষাতেই কোর্স নেওয়ার সুযোগ থাকে।

আয়ের সুযোগ

অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ফিনল্যান্ড বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ। এখানে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে কাজ করার প্রচুর সুযোগ, যা ইউরোপের যেকোনো দেশের তুলনায় নিঃসন্দেহে অনেক বেশি। খণ্ডকালীন কাজ সাধারণত ক্লিনিং কোম্পানিগুলোতেই হয়ে থাকে। তাছাড়া হোটেল কিংবা ফাস্ট ফুডের দোকানে কাজ পাওয়া যায়। আর অন্যান্য কাজ পেতে হলে ফিনিশ কিংবা সুইডিশ ভাষা জানা অপরিহার্য। তাছাড়া কম্পিউটার বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে বিশেষ সুবিধা ।

যেসব বিশ্ববিদ্যালয় দেয় বৃত্তি ও ফেলোশিপ

আল্টো বিশ্ববিদ্যালয়, হেলসিংকি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব ইস্টার্ন ফিনল্যান্ড, জাইভাস্কিলা ইউনিভার্সিটি, ল্যাপল্যান্ড ইউনিভার্সিটি, এলইউটি ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ওলু, হ্যাঙ্কেন স্কুল অব ইকোনমিকস, ইউনিভার্সিটি অব দ্য আর্টস হেলসিঙ্কি, ট্যাম্পেরি বিশ্ববিদ্যালয়, তুর্ক বিশ্ববিদ্যালয়, ভাসা বিশ্ববিদ্যালয়, আবো একাডেমি বিশ্ববিদ্যালয়।

Related Post

Leave a Comment