স্বাস্থ্য টিপস

মেথি উপকারিতা : মেথি এক ধরনের গন্ধযুক্ত মসলা। যারা মসলা মেশানাে খাবার খান, তাদের রান্না ঘরে মেথির খোঁজ পাওয়া যাবেই। কারণ দোকানে পাঁচ ফোড়ন’ চাইলে মেথিও পাওয়া যায়। তাই বলা চলে, সবারই রান্নাঘরে কিছু না কিছু মেথি পাওয়া যাবে। মেথির স্বাদ খেতে কিছুটা তেঁতাে হলেও-এর গুণ অনেক। হজমে, কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতে-এর অনেক উপকারিতা।

এছাড়াও সর্দি-কাশি, ভাইরাস জ্বর, বসন্ত রােগের উপশমে মেথির গুণ অতুলনীয়। মেথিগাছ সাধারণত এক থেকে দেড় ফুট লম্বা হয়। পাতা হয় ১ ইঞ্চি লম্বা। আর একই বোটায় তিনটি পাতা দেখা যায়। আশ্বিন-কার্তিক মাসে মেথির বীজ লাগানাে হয়। মাঘ-ফাল্গুনের মধ্যে মেথি ধরতে দেখা যায়। একটি শুটির মধ্যে ১০-১৫টি মেথি থাকে। পুঁটি ফাল্গুন-চৈত্র মাসে পেকে যায়। সাধারণ রােগ ছাড়াও কিছু কঠিন রােগ সারাতেও মেথি ব্যবহার করা যায়। মেথির অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে।

শিশুর জন্মের পরে মায়ের দুর্বলতা :

শিশুর জন্মের পর মা খুব দুর্বল হয়ে পড়ে। এ রকম ক্ষেত্রে মেথি খুব উপকারী। এজন্য প্রথমে ৫ গ্রাম মেথিকে কিছুটা থেঁতাে করে নিতে হবে। তারপর রাতে কমপক্ষে আধা সের হাল্কা গরম পানিতে ভিজিয়ে পরের দিন সকালে হেঁকে নিতে হবে। এরপরে সারাদিন একটু একটু করে ওই পানিটুকু খেতে হবে। এতে শরীর হবে ঝরঝরে। আর ক্লান্তি হবে দূর।

অতি কঠিন পেটের রােগ :

যদি সামান্য অনিয়মে পাতলা পায়খানা, আমাশয় ইত্যাদিতে ভুগতে হয়, তবে মেথির চিকিৎসা ভালাে উপকার দেয়। এজন্য যত মেথি গুঁড়া তার ৪ গুণ দুধ ও ২ গুণ পানি নিয়ে সিদ্ধ করতে হবে। পানি শুকিয়ে কমে আসলে চুলা থেকে নামিয়ে ছেকে আবার রােদে শুকিয়ে নিতে হবে। এভাবে ৩/৪ গ্রাম পরিমাণ নিয়ে সে সাথে কিছু চিনি মিশিয়ে সকালে ও বিকালে দু’বার খেলে কঠিন পেটের রােগ সেরে যাবে।

জলবসন্ত :

শরীরে বসন্ত দেখা দিলে কখনাে জ্বর হয়। কখনাে চুলকানি বা জ্বালাপােড়া হয়। কখনাে-বা বমি বা খাবারে অরুচি দেখা দেয়। এসব সারাতে মেথি ভেজানাে পানি খাওয়া যেতে পারে। খেতে হবে একটু একটু করে সারাদিন। এতে করে গায়ের জ্বালা-পােড়া দূর হবে। গা-হাত-পা ব্যথা কমে যাবে। বমি বন্ধ হবে। আর বসন্তের গুটিগুলাে তাড়াতাড়ি বের হয়ে যাবে। ৫-৬ গ্রাম মেথি ১ গ্লাস পানিতে ১০-১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে সারাদিনে কয়েকবার করে খেতে হবে।

উচ্চ রক্তচাপ :

উচ্চ রক্তচাপ হলে মাথাঘােরা, বদহজম, বুক ধড়ফড়ানি, গা টন্ট করা। ইত্যাদি হতে পারে। এ সময়ে ৫ গ্রাম মেথি আধা লিটার গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সেই পানিটা সারাদিনে কয়েকবার খান। দেখবেন, রােগের অসুবিধাগুলাে কেটে যাবে এবং শরীর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠবে।

অরুচি :

যে-কোনাে ধরনের অরুচিতেই মেথি খুব উপকার দেয়। এক্ষেত্রে মেথি শাক সিদ্ধ করে পানিটা ফেলে দিয়ে সামান্য লবণ মিশিয়ে আবার চুলায় দিয়ে শাকের ঘণ্ট বানাতে হবে। তারপর ঘণ্টটা খেলে অরুচি সেরে যাবে। এ ছাড়াও মেথি গুঁড়া আধা গ্রাম পরিমাণ নিয়ে ঠাণ্ডা পানিসহ রােজ একবার করে খেলে অরুচি ভাব আর থাকবে না।

অনিয়মিত মাসিক :

মাসিক নিয়মিত না হলে মেয়েরা খুব দুর্বল হয়ে পড়ে। এটা দূর করতে ৩ গ্রাম মেথি ও ৩-৪ গ্রাম ধনে এক সঙ্গে আগের রাতে এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরের দিন সকালে ওই পানিটা হেঁকে সকালে ও বিকালে দু’বার খেতে হবে। কয়েকদিন খেলেই অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত হবে।

গেঁটে বাত :

যাদের গেঁটে বাত আছে, তারা একটু ঠাণ্ডা জিনিস খেলেই গাঁটে গাঁটে ব্যথা হয়। তাদের সুবিধার জন্য ১০ গ্রাম মেথি গুঁড়া সকালে ও বিকালে গরম পানিসহ খেলে ব্যথা কমে যাবে।

ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে :

ডায়বেটিস বা বহুমূত্র রােগ হলে মেথি গুঁড়া করে ১ থেকে ২ চামচ নিতে হবে। ১ গ্লাস পানিতে মিশিয়ে দিনে ২/৩ বার খেতে হবে। এভাবে ১ মাস খেলে উপকার পাওয়া যাবে।

Related Post

Leave a Comment