স্বাস্থ্য টিপস

হিটস্ট্রোকে করণীয়

অতিরিক্ত গরমের কারণে সৃষ্টি হতে পারে নানা শারিরীক সমস্যা, বিশেষ করে হিটস্ট্রোক বা সানস্ট্রোক । শরীরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ার কারণে সৃষ্ট এক ধরনের জটিলতা হচ্ছে হিট স্ট্রোক আমরা জানি মানুষের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট । কোন কারণে যদি তা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের উপরে চলে যায় তাহলে হিট স্ট্রোক হতে পারে ।

হিটস্ট্রোক হওয়ার কারণ

আমরা জানি বিপাক ক্রিয়ার ফলে আমাদের শরীরে তাপ উৎপন্ন হয়। ঘামের মাধ্যমে শরীর অতিরিক্ত তাপ বের করে। দেয়ার কাজটি করে থাকে । কিন্তু অত্যধিক গরম ও উচ্চ আর্দ্রতার কারণে এই তাপ বের করে দেয়ার কাজটি যখন সম্ভব হয় না, তখনই হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা দেখা দেয় । হিটস্ট্রোকের আরেকটি কারণ হল ডিহাইড্রেশন । একজন ডিহাইড্রেটেড ব্যক্তি ঘামের মাধ্যমে যথেষ্ট দ্রুত তাপ বের করে দিতে সক্ষম হন না। যার ফলশ্রুতিতে শরীরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক রকম বেড়ে গিয়ে হিট স্ট্রোক হতে পারে ।

যাদের হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি

নিম্নোক্ত চার শ্রেনী হিটস্ট্রোকের জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।

  • শিশু (শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ করার সিস্টেম ঠিকভাবে ডেভেলপড না হওয়ার কারণে )
  • বৃদ্ধ (শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ করার সিস্টেম দুর্বল হয়ে পড়ে )
  • অ্যাথলেট
  • প্রচণ্ড রােদে যারা বাইরে কাজ করেন, যেমন- দিনমজুর

শরীরের তাপমাত্রা অসহনীয়মাত্রায় বেড়ে গেলে নিচের লক্ষণগুলাে দেখা দেবে

  • মাথা ঝিম ঝিম করা
  • বমি করা
  • অবসাদ
  • দুর্বলতা
  • মাথা ব্যাথা
  • মাংশপেশির খিঁচুনি
  • চোখে ঝাপসা দেখা

হিটস্ট্রোকের লক্ষণসমূহ

  • দেহের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়া
  • ঘাড় মিড়া খসখসে লাল হয়ে যাওয়া
  • পালস বেড়ে যাওয়া
  • শ্বাস নিতে কষ্ট
  • ব্যবহারের অসংলগ্নতা
  • হ্যালুসিনেশন
  • কনফিউশন
  • খিটখিটে মেজাজ
  • খিচুনি
  • কোমায় চলে যাওয়া

হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তির শুশ্রুষা

প্রথম এবং প্রধান করণীয় হবে আক্রান্ত ব্যক্তির তাপমাত্রা কমিয়ে আনার ব্যবস্থা করা। এজন্য

  • হিটস্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিলেই আক্রান্ত ব্যক্তিকে ছায়াযুক্ত একটি জায়গায় নিয়ে আসুন, গায়ের ভারি কাপড় খুলে দিন এবং ঠান্ডা বরফ পানি দিয়ে গা মুছে দিন। তাকে ফ্যানের নিচে বা এসি রুমে নিয়ে আসুন। সম্ভব হলে তার বগল ও রানের খাঁজে আইস প্যাক দিন।।
  • যদি আক্রান্ত লােকটি পানি খাওয়ার মত অবস্থায় থাকে তাহলে তাকে ঠান্ডা পানি বা পানীয় পান করতে দিন।
  • একটি থার্মোমিটার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মেপে দেখুন এবং ১০১-১০২ ডিগ্রী ফারেনহাইটে না আসা পর্যন্ত তাকে ঠান্ডা করা চালিয়ে যান।
  • হিট স্ট্রোক হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্থানীয় হাসপাতালে নিতে হবে। মনে রাখবেন হিট স্ট্রোক এক প্রকার মেডিকেল ইমার্জেন্সি যেখানে সাথে সাথে রােগিকে যথাযথ চিকিৎসা না দেয়া হলে রােগি মৃত্যুবরন করতে পারে।

হিটস্ট্রোক প্রতিরােধে করণীয়

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরােধমূলক ব্যবস্থাটি হবে দেহকে dehydrated হতে না দেয়া। এজন্য প্রচুর পরিমাণে পানি, ফলের রস খান।

  • ঘামের সাথে দেহের লবণ বেরিয়ে যায়। দুর্বল বােধ করলে স্যালাইন খেতে পারেন ।
  • বেশি গরমে ভারি কাজ পরিহার করা । যদি করতেই হয় তাহলে কাজের ফাকে ফাকে প্রচুর পরিমানে তরল পান করা ।
  • খেয়াল রাখুন সেটি যেন আবার ক্যাফেইন সমৃদ্ধ না হয় (সফট ড্রিংক, চা ইত্যাদি)
  • বাইরে বের হওয়ার সময় ঢিলেঢালা ও হাল্কা রঙের পােশাক পরা ।
  • ক্যাপ বা ছাতা ব্যবহার করুন।

Related Post

Leave a Comment