আমাদের সকল পোস্ট ও ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে পেতে ফলো করুন :

Click Here
কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স

ভেটো কি? ভেটোর উৎপত্তি ও ভেটো ক্ষমতার প্রয়োগ

ভেটো (Veto) শব্দটি ল্যাটিন ভাষা ও Forbid থেকে আগত, যার অর্থ ‘আমি মানি না’। প্রাচীন রোমের কনসাল এবং ট্রিবিউনগণ আইনসভায় তাদের ভেটো প্রদান করতে পারতেন। তন্মধ্যে দু’জন কনসাল নির্দিষ্ট বছরে সামরিক কিংবা বেসামরিক পর্যায়ের কোনো প্রস্তাবনা বা সিদ্ধান্ত বাতিলকল্পে একে অপরের বিরুদ্ধে ভেটো প্রয়োগ করতে পারতেন।

ভেটোর উৎপত্তি

১৯৪৫ সালে আন্তর্জাতিক সংস্থার আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে ভেটো ক্ষমতার ধারণা আনকোরা ছিল না । তখন লিগ অব নেশনসের পদ্ধতিগত ইস্যুর বাইরে অন্যান্য বিষয়ে সব সদস্য রাষ্ট্রেরই ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা ছিল ১৯৩৬ সাল নাগাদ, লিগ কাউন্সিল চারটি স্থায়ী সদস্য এবং এগারোটি অস্থায়ী সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করে মোট ১৫টি দেশকে ভেটো ক্ষমতা দেওয়া হয়।

[penci_related_posts dis_pview=”no” dis_pdate=”no” title=”এই বিভাগ থেকে আরো পড়ুন” background=”” border=”” thumbright=”no” number=”4″ style=”list” align=”none” withids=”” displayby=”cat” orderby=”rand”]

জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার পর অবশ্যম্ভাবী শব্দ হিসেবে Veto নিরাপত্তা পরিষদে ব্যাপকভাবে পরিচিতি পায় ও এটি বৈশ্বিকভাবে বিরাট প্রভাব বিস্তার করে। নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য দেশ— চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র যেকোনো ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও আইন প্রণয়ন অনুমোদনে বাধা প্রদান করতে পারে, যা Veto ক্ষমতা হিসেবে পরিচিত।

  • জাতিসংঘ সনদের ২৭নং অনুচ্ছেদে ভেটো ক্ষমতার কথা উল্লেখ রয়েছে। ২৭নং ধারায় বলা হয়- নিরাপত্তা পরিষদে প্রত্যেক সদস্যের একটি ভোটদানের অধিকার থাকবে। পদ্ধতিগত বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে নিরাপত্তা পরিষদে নয়টি সদস্যের ইতিবাচক ভোটে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। অন্যান্য বিষয়ে স্থায়ী সদস্যদের সমর্থনসূচক ভোটসহ মোট নয়টি সদস্যের ইতিবাচক ভোটে নিরাপত্তা পরিষদ সিদ্ধান্ত নেবে ।
  • অবশ্য ষষ্ঠ অধ্যায় অথবা ৫২ ধারার (৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে বিবাদমান সদস্য ভোটদানে বিরত থাকবে। ৫২ ধারার (৩) অনুচ্ছেদ বলা হয় সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলোর উদ্যোগে অথবা নিরাপত্তা পরিষদের নির্দেশক্রমে এসব আঞ্চলিক ব্যবস্থা বা সংস্থার মাধ্যমে স্থানীয় বিরোধগুলো শান্তিপূর্ণ উপায়ে মীমাংসার চেষ্টাকে পরিষদ উৎসাহ দেবে।

ভেটো ক্ষমতার প্রয়োগ

১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৬ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমান রাশিয়া) নিরাপত্তা পরিষদে প্রথম ভেটো প্রদান করে । উল্লেখ্য, জাতিসংঘে Mr. Veto হিসেবে খ্যাত সোভিয়েত ইউনিয়নের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী Vyacheslav Molotov.

নিরাপত্তা পরিষদের ৫ দেশের ভেটো

দেশ প্রথম সর্বশেষ  মোট 
রাশিয়া ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৬ ২৫ অক্টোবর ২০২৩ ১২৪
ফ্রান্স ৩০ অক্টোবর ১৯৫৬ ২৩ ডিসেম্বর ১৯৮৯ ১৬
যুক্তরাজ্য ৩০ অক্টোবর ১৯৫৬ ২৩ ডিসেম্বর ১৯৮৯ ২৯
যুক্তরাষ্ট্র ১৭ মার্চ ১৯৭০ ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ৮৪
চীন ২৫ আগস্ট ১৯৭২ ২৫ অক্টোবর ২০২৩ ১৮

 আপডেট : ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত

ফিলিস্তিন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৪ ভেটো

গত ৭৮ বছরে নিরাপত্তা পরিষদে তোলা অধিকাংশ প্রস্তাবই ছিল কয়েক দশক ধরে চলা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিরসনে একটি শান্তি কাঠামো প্রণয়নসংক্রান্ত। এসব প্রস্তাবে ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলা, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন ও ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি থেকে বিতাড়ন করে তাদের ভূখণ্ড দখল করে ইহুদি বসতি নির্মাণের নিন্দা জানানোর কথা হয়। ১৯৪৫ সাল থেকে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনসংশ্লিষ্ট ৩৬টি প্রস্তাব নিরাপত্তা পরিষদে তোলা হয়।

প্রতিবারই প্রস্তাবে ভেটো দেয় নিরাপত্তা পরিষদের কোনো না কোনো স্থায়ী সদস্য দেশ। তবে এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৪ বার ভেটো দেয়ে যুক্তরাষ্ট্র । আর রাশিয়া ও চীন একবার করে ভেটো দেয় ৷ ফিলিস্তিন ইস্যু ছাড়া সব মিলিয়ে মোট ৪৬ বার নিরাপত্তা পরিষদে ইসরায়েলকে বাঁচাতে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দেয় । এর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ লেবাননে হামলাসহ সিরিয়ার গোলান মালভূমি দখল করে নেওয়ার ঘটনা।

নিজেদের কয়েক দশকের পুরোনো নীতিকে পাশ কাটিয়ে ২০১৯ সালে গোলান মালভূমিকে ইসরায়েলের ভূখণ্ড বলে স্বীকৃতি দেয় ওয়াশিংটন। ১৯৭২ সালে মাত্র একবারই ইসরায়েলের পক্ষে ভেটো দেওয়া থেকে বিরত ছিল যুক্তরাষ্ট্র। তখন সব পক্ষকে বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তার স্বার্থে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button