100 English Essay For Juniors

ঈদল আযহা মুসলিম বিশ্বের ত্যাগের উৎসব। এর সাথে রয়েছে মিলাতে ইব্রাহীমের সর্বশ্রেষ্ঠ আত্মামে আলাপ কুরবানী। আর একই সাথে ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্যের সুদৃঢ় বন্ধনে পালিত হয় মুসলিম উম্মাহর আর্থিক ও শারীরিক ইবাদত হজ। তাই পবিত্র জিলহজ মাসের এসব আমল বা ইবাদত নিয়েই আমাদের এ আয়ােজন।

ঈদুল আযহা

মুসলমানদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসবের অন্যতম একটি ঈদুল আযহা। এটা ‘কুরবানীর ঈদ বা বাকরা ঈদ’ নামেও পরিচিত। ঈদ অর্থ উৎসব বা আনন্দ, আর আযহা অর্থ কুরবানী বা উৎসর্গ করা। মহানবী (স) ঈদুল আযহার দিন ঈদের নামাজ পরবর্তী খুতবায় বলেছেন, এ দিনের প্রথম কাজ হলাে সালাত আদায় করা, এরপর নহর (কুরবানী) করা । ঈদুল আযহার দিনের প্রধান আমল কুরবানী।

ঈদুল আযহার সময়

আরবি জ্বিলহজ মাসের ১০ তারিখ ঈদুল আযহা পালন করা হয়।

ঈদের নামাজ

ঈদের নামাজ দুই রাকাত। এটি ওয়াজিব নামাজ, যা জামায়াতের সাথে পড়তে হয়। মুসলিমগণ এ নামাজ খােলা মাঠে বা মসজিদে আদায় করে থাকেন। ঈদের নামাজ সাধারণত জ্বিলহজের ১০ তারিখে, সূর্য উদয়ের পর থেকে যােহরের ওয়াক্ত আসার আগ পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ে আদায়। করা হয়ে থাকে। ঈদের নামাজ শেষে ইমামের জন্য খুত্বা পড়া সুন্নাত ও মুসল্লিদের জন্য খুত্ব শােনা ওয়াজিব। সবশেষে খুতবার পরে দোয়ায় শরিক হতে হয়।

এই বিভাগ থেকে আরো পড়ুন

তাকবীরে তাশরীক

জ্বিলহজ মাসের ৯ তারিখ ফজর হতে ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত (মােট ২৩ ওয়াক্ত) সকলের উপর ফরয নামাযের পরেই একবার তাকবীরে তাশরীক পাঠ করা ওয়াজিব। পুরুষরা উচ্চস্বরে ও স্ত্রীলােকগণ নীরবে পাঠ করে। তাকবীরে তাশরীক হলাে- আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহ আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ। ঈদুল আযহার মূল শিক্ষা হলাে সম্পদের মােহ, ভােগ-বিলাসের আকর্ষণ, স্ত্রী-সন্তানের ভালবাসা সবকিছুর ঊর্ধ্বে আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রতি আত্মসমর্পণ।

কুরবানী

আরবি ‘কুরবানী’ শব্দের অর্থ যার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়। শব্দটি আবার ত্যাগ করা ও উৎসর্গ করা অর্থেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কেননা এ ত্যাগের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়। কার উপর ওয়াজিব : সেই বালেগ, মুকীম, স্বাধীন মুসলিমের ওপর কুরবানী ওয়াজিব, যিনি ১০ জ্বিলহজ ফজর থেকে ১২ জ্বিলহজ সন্ধ্যা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নিসাব পরিমাণ সম্পদের অধিকারী হবেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন, কাজেই তােমার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড় এবং কুরবানী কর। (সূরা আল কাউসার , আয়াত : ২)।

কুরবানীর সময়

জ্বিলহজ মাসের ১০ তারিখ তথা ঈদের। নামাজের পর থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত কুরবানী করা যায়। তবে প্রথম দিন কুরবানী করাই উত্তম।

কুরবানীর পশু

উট, মহিষ, গরু, দুম্বা, ছাগল ও ভেড়া– এই ছয় শ্রেণির পশু দিয়ে কুরবানী করা যায়।

গােশত বণ্টন

কুরবানীর ক্ষেত্রে নিয়তের বিশুদ্ধতা অপরিহার্য। পবিত্র কুরআনে (সূরা আল হাজ্জ, আয়াত : ৩৬) তিন শ্রেণির লােককে কুরবানীর গােশত খাওয়া বা খাওয়ানাের কথা বলা হয়েছে- কুরবানী দাতা, আত্মীয়-প্রতিবেশী এবং ফকির-মিসকিন। আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ইবরাহিম (আ) তার প্রিয় পুত্রকে কুরবানী দিতে গিয়ে আত্মত্যাগের যে মহান দৃষ্টান্ত ও আদর্শ স্থাপন করেছেন, সেই স্মৃতিকে স্মরণ রেখে মহান আল্লাহর প্রেমের চেতনাকে প্রখর রাখার জন্য মুসলিম উম্মাহ কুরবানী দেয়। এটা একদিকে যেমন আল্লাহর জন্য আত্ম-উৎসর্গের শিক্ষা দেয়, অপরদিকে অন্যের সাথে সামাজিক বন্ধন ও ভ্রাতৃত্ব সৃষ্টি করে।

হজ

হজ ইসলামের পঞ্চম রােকন বা স্তম্ভ। হজ শব্দের আভিধানিক অর্থ- সংকল্প করা, কোথাও যাওয়ার ইচ্ছা করা। ইসলামী শরীয়াতের পরিভাষা অনুসারে নির্দিষ্ট দিনে মক্কার পবিত্র কা’বা শরীফ প্রদক্ষিণ, আরাফাতের ময়দানে অবস্থান, সাফা ও মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মধ্যবর্তী স্থানে সাঈ করা, মিনায় অবস্থান প্রভৃতি কাজ প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স) যেভাবে নির্ধারণ করে দিয়েছেন সেভাবে সম্পন্ন করার নাম হজ।

হজের গুরুত্ব

আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, মক্কা শরীফ পর্যন্ত পৌছাতে সক্ষম প্রত্যেক ব্যক্তির উপর আল্লাহর জন্য হজ আদায় করা ফরয। (সূরা আল ইমরান, আয়াত : ৯৭) শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য জীবনে একবার হজ করা ফরয।

হজের আহকাম

হজের ফরয মােট তিনটি

  • ইহরাম বাধা
  • আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা
  • তাওয়াফে যিয়ারত সম্পন্ন করা।

হজের ওয়াজিবসমূহ-

  • মুজদালিফায় অবস্থান ও সাতবার সাঈ করা
  • মিনায় জামারাসমূহে কঙ্কর নিক্ষেপ
  • কুরবানী করা
  • মাথার চুল মুণ্ডানাে
  • বিদায়কালীন তাওয়াফ সম্পন্ন।

হজের তালবিয়া

হজ ও ওমরা পালনকারীদের মিকাতে ইহরাম বাঁধার পর হতে তাওয়াফের স্থানে প্রবেশের পূর্ব পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করতে হয়। তালবিয়া হলাে- লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক। লাব্বাইক লা শারীকালাকা লাব্বাইক। ইন্নাল হামদা ওয়ান নেয়মাতা লাকা ওয়াল মুলক। লা শারীকা লাক।

Related Post

Leave a Comment