![100 English Essay For Juniors](https://bcspreparation.net/wp-content/uploads/2022/09/Bcs-Preparation-1-780x470.png)
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছিলেন মানবতাবাদী, পণ্ডিত, সাহিত্যিক ও সমাজসংস্কারক। তিনি শিক্ষা এবং সমাজ-সংস্কারে উল্লেখযােগ্য অবদান রেখে গেছেন। ১৮২০ সালে ঈশ্চরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মেদিনীপুর জেলায় এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী।
মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে তিনি কাব্য, ব্যাকরণ, বেদান্ত প্রভৃতি শাসে গভীর জ্ঞান লাভ করেন। উনিশ বছর বয়সে বিশেষ পরীক্ষায় সাফল্য অর্জনের জন্য তাঁকে ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি প্রদান করা হয়। কলকাতার সংস্কৃত কলেজে তিনি উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। ১৮৪১ সালে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের প্রধান পণ্ডিত হিসেবে নিযুক্ত হন।
১৮৯১ সালে তিনি সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত হন। তিনি শিক্ষা ও সমাজ-সংস্কারে অমূল্য অবদান রেখে ১৮৯১ সালে পরলোক গমন করেন।
শিক্ষা-সংস্কার :
ঈশ্বরচন্দ্র প্রথমে কলকাতার সংস্কৃত কলেজের অধ্যাপক ও পরে অধ্যক্ষ হন। সে সময় তিনি সংস্কৃত কলেজের অনেক সংস্কার সাধন করেন। পূর্বে সংস্কৃত কলেজে শুধু ব্রাহ্মণরা পড়াশােনা করত। ঈশ্বরচন্দ্র সকল হিন্দু ছাত্রের জন্য উক্ত কলেজের দ্বার উন্মুক্ত করেন। শিক্ষা বিস্তারের জন্য তিনি বর্ণমালা’, কথামালা’ প্রভৃতি পুস্তক রচনা করেন। তিনি নারীশিক্ষা বিস্তারেও ব্রতী হন।
তিনি কিছুদিনের জন্য বেথুন কলেজে সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। জনশিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষা-পরিদর্শকের দায়িত্ব পালনের সময়ে তিনি অসংখ্য বিদ্যালয় স্থাপন করেন। তিনি তাঁর জন্মস্থান মেদিনীপুরে একটি অবৈতনিক বিদ্যালয় ও একটি নৈশ বিদ্যালয় স্থাপন করেন। তাঁর নামানুসারে কলকাতায় বিদ্যাসাগর কলেজ স্থাপিত হয়। তিনি এই কলেজের অনেক উন্নতি সাধন করেন।
সমাজ-সংস্কার :
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর একজন প্রসিদ্ধ সমাজসংস্কারক ছিলেন। তিনি বহুবিবাহ, বাল্যবিবাহ প্রভৃতি কুসংস্কারের বিরুদ্ধে এবং বিধবা-বিবাহের পক্ষে আন্দোলন গড়ে তােলেন। বিধবা-বিবাহ বৈধকরণ ও প্রবর্তন তার জীবনের অক্ষয় কীর্তি। বিদ্যাসাগরের প্রচেষ্টায় ১৮৫৬ সালে হিন্দু বিধবা আইন পাস হয়। এ আইন প্রবর্তনের ফলে ঈশ্বরচন্দ্রের তত্ত্বাবধানে বাংলায় প্রথম বিব্বা-বিবাহ সম্পন্ন হয়।
১৮৭০ সালে তার পুত্র নারায়ণচন্দ্র এক বিধবাকে বিয়ে করেন। এ বিয়ের ফলে সমাজ-সংস্কারের ক্ষেত্রে এক অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রচেষ্টায় সমাজ অনেক অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের অভিশাপ থেকে মুক্তি পায় এবং আধুনিক মুক্তচিন্তা ও চেতনার জগতে উন্নীত হয়।