বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের কোনাে না কোনাে সংবিধান রয়েছে। যে রাষ্ট্রের সংবিধান যত উন্নত, সে রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা ততটা উত্তমভাবে পরিচালিত হয়। উত্তম সংবিধানের নিমােক্ত বৈশিষ্ট্যগুলাে রয়েছে ।
সুস্পষ্ট :
উত্তম সংবিধানে অধিকাংশ বিষয় লিখিত থাকে। এ সংবিধানের ভাষা সহজ, সরল ও প্রাঞ্জল হয়। এ কারণে উত্তম সংবিধান সকলের নিকট সুস্পষ্ট ও বােধগম্য হয়।
সংক্ষিপ্ত :
উত্তম সংবিধান সংক্ষিপ্ত প্রকৃতির। অপ্রয়ােজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক বিষয় উত্তম সংবিধানে স্থান পায় না। রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য উল্লেখযােগ্য বিধিবিধানগুলাে এ সংবিধানে উল্লেখ থাকে।
আরো পড়ুন :
- বাংলাদেশ সরকারের স্বরূপ ও বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন বিভাগ
- বাংলাদেশের সংবিধানের সংশােধনীসমূহ
- বাংলাদেশের সংবিধান ও বাংলাদেশের সংবিধানের বৈশিষ্ট্য
- উত্তম সংবিধানের বৈশিষ্ট্য
- অলিখিত সংবিধানের বৈশিষ্ট্য
- লিখিত সংবিধানের বৈশিষ্ট্য
- সংবিধানের শ্রেণিবিভাগ
- সংবিধান প্রণয়ন পদ্ধতি
- সংবিধানের ধারণা ও গুরুত্ব
- আইন ও শাসন বিভাগের সম্পর্কের ভিত্তিতে সরকারের শ্রেণিবিভাগ
- পৌরনীতি ও নাগরিকতা | পৌরনীতি ও নাগরিকতা বিষয়ের পরিসর বা বিষয়বস্তু
- পরিবার কি | পরিবারের শ্রেণিবিভাগ | পরিবারের কার্যাবলি
- রাষ্ট্র কাকে বলে? রাষ্ট্রের উপাদান কয়টি ও কি কি ?
মৌলিক অধিকার :
নাগরিকের মৌলিক অধিকার উত্তম সংবিধানে উল্লেখ থাকে। এর ফলে জনগণ তার অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়। তাছাড়া শাসক বা অন্য কেউ এ অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।
জনমতের প্রতিফলন :
উত্তম সংবিধান জনমতের ভিত্তিতে প্রণীত হয়। এ সংবিধানে জনগণের চাহিদা ও আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে। তাছাড়া সামাজিক রীতি-নীতি ও ঐতিহ্য এ সংবিধানে প্রতিফলিত হয়।
সুষম প্রকৃতির :
উত্তম সংবিধান সুষম প্রকৃতির। এর অর্থ, উত্তম সংবিধান পরিবর্তনীয় ও দুস্পরিবর্তনীয় সংবিধানের মাঝামাঝি অবস্থান করে। অর্থাৎ এটি খুব সুপরিবর্তনীয় কিংবা খুব বেশি দুষ্পরিবর্তনীয় নয়। এর ফলে উত্তম সংবিধান সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে সক্ষম।
সংশােধন পদ্ধতি :
উত্তম সংবিধানের কোনাে ধারার সংশােধন বা পরিবর্তন নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হয়। অর্থাৎ এ সংবিধানে সংশােধন পদ্ধতি উল্লেখ থাকে। সংবিধানের কোন অংশ কীভাবে সংশােধন করা হবে তা উত্তম সংবিধানে উল্লেখ থাকে।
রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি :
রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি উত্তম সংবিধানে উল্লেখ থাকে। যেমন বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে সন্নিবেশিত করা হয়েছে।
জনকল্যাণকামী :
দার্শনিক রুশাে বলেছেন, যে আইনে মানুষের কল্যাণ নাই তা উত্তম সংবিধান হতে পারে না। সুতরাং উত্তম সংবিধান হবে জনকল্যাণকামী।
কোনাে সংবিধানে উপরে উল্লিখিত বৈশিষ্ট্যগুলাে থাকলে তাকে উত্তম সংবিধান বলা যাবে ।