কার্পণ্য ও মিতব্যয়িতা এক কথা নয়
এই দুইকে এক মনে করা নিতান্তই ভ্রম অর্থ ব্যয়ের ব্যাপারে মানুষের সঞ্চয়ী মনােবৃত্তি দুভাবে প্রকাশ পায়। একটি কার্পণ্য এবং অপরটি মিতব্যয়িতা। আপাতদৃষ্টিতে উভয় ক্ষেত্রেই ব্যয়ের ব্যাপারে কুণ্ঠা প্রকাশ পেলেও তাদের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান। কৃার্পণ্যের মধ্যে আছে সংকীর্ণতা আর মিতব্যয়িতার মধ্যে আছে সংযম আর বিবেচনাশীলতা। অর্থসম্পদ ব্যয় করার বিষয়ে বিশেষ সচেতনতার পরিচয় দিয়ে থাকে মানুষ। সম্পদ অর্জন করা কঠিন। বলে তা ব্যয়ের ব্যাপারেও মানুষের নানাদিক বিবেচ্য। অনেকে অর্থ ব্যয় করতে মােটেই ইঙ্ক থাকে।কিভাবে অর্থ ব্যয় না করে চলা যায় সেদিকেই দৃষ্টি থাকে। এ ধরনের লােকেরা কৃপণ বলে। অভিহিত হয়। অর্থ ব্যয়ে অনিচ্ছাই কার্পণ্য। অপরদিকে একশ্রেণীর লােক অর্থ ব্যয় করার সময় খুব বিবেচনা করে ব্যয় করে। প্রয়ােজনীয়তা, উপযােগিতা ইত্যাদি দিক বিবেচনা করে অর্থ ব্যয় করা হলে সেটাকে মিতব্যয়িতা বলে আখ্যা দেয়া যায়। পরিমিত ব্যয়ের মধ্যে অর্থের সদ্ব্যবহার হয়ে থাকে। কার্পণ্য ও মিতব্যয়িতা অর্থব্যয় সংক্রান্ত হলেও তা এক পর্যায়ভুক্ত হয় না। উভয়ের মধ্যে মিল নেই, বরং ভিন্নধর্মী বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। কৃপণতায় আছে মনের সংকীর্ণতা। প্রয়ােজনের সময় কৃপণের অর্থ উপকারে আসে না। শুধু সঞ্চয় করে রাখার মধ্যে সম্পদ সংগ্রহের সার্থকতা নেই।–বরং মিতব্যয়িতার মাধ্যমে অর্থ ব্যয় করা হলে সর্বোত্তমভাবে তা কাজে লাগে। তাই কার্পণ্য ও মিতব্যয়িতা এক পর্যায়ভুক্ত নয়। তাই এই দুইকে এক মনে করাও ভুলের শামিল।
এই বিভাগের আরো ভাবসম্প্রসারণ :
- কীর্তিমানের মৃত্যু নাই
- পথ পথিকের সৃষ্টি করে না পথিকই পথ সৃষ্টি করে
- অর্থসম্পত্তির বিনাশ আছে কিন্তু জ্ঞানসম্পদ কখনাে বিনষ্ট হয় না
- অসি অপেক্ষা মসী অধিকতর শক্তিমান
- অনুকরণের দ্বারা পরের ভাব আপন হয় না অর্জন না করলে কোন বস্তুই নিজের হয় না
- অর্থই অনর্থের মূল
- অধর্মের ফল হইতে নিষ্কৃতি নাই
- মানুষের মৃত্যু হলে তবুও মানব থেকে যায়