কালিজিরার উপকারিতা : জিরা দুই রকম, যেমন- জিরা এবং কালিজিরা। এদেরকে আমাদের রান্না ঘরে দেখা গেলেও ঔষধ হিসেবেও এরা কম যায় না। শুনেছি কালিজিরা নাকি আমাদের দেশে হতাে না। তবে কবে, কখন যে আমাদের দেশে এ গুলাে জন্মাতে শুরু করেছে, তাও নাকি সঠিক করে জানা যায় নি। কালিজিরার গাছ দেখতে ছােট। লম্বায় এক হাত বা তার চেয়ে একটু বড় হতে পারে। কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে কালিজিরা গাছে ফুল আসে। তারপরে ফল হয় এবং সেটি পাকে পৌষ-মাঘের দিকে। কালিজিরা ক্ষুধা বাড়ায়। পেটের বায়ু দূর করে আর প্রস্রাব বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া পেট ও ফুসফুসের রােগে ভালাে কাজ করে। অর্শ রােগেও এটি ব্যবহার করা হয়। তবে এই কালিজিরা গর্ভবতী মায়ের বুকের দুধ বাড়াতেও সাহায্য করে বলে জানা গেছে। তা হলে জানা যেতে পারে আর কী কী রােগে কালিজিরা উপকারে লাগে:
অনিয়মিত মাসিক :
অনেক মেয়েরই মাসিকের সমস্যা হয়ে থাকে। কখনাে আগে, কখনাে-বা পরে হয়। কেউ আবার মাসিকে অল্প রক্ত বা বেশি রক্ত যাবার কারণে কষ্ট পান। এই ক্ষেত্রে কালিজিরার চিকিৎসা ভালাে ফল দিতে পারে। মাসিক হওয়ার ৫/৭ দিন আগে থেকে কালিজিরার তৈরি ঔষধ খেতে হবে। প্রথমে ৫০০ মিলিগ্রাম কালিজিরা নিয়ে হাল্কা গরম পানির সাথে মিশিয়ে সকালে আর বিকালে দু’বার খেতে হবে। আশা করা যায়, এতে মাসিকের সমস্যা কমে যাবে। যদি এতে কাজ না হয়, তবে দুই-তিন মাস এই ঔষধ চালিয়ে যেতে হবে।
বুকে দুধ বাড়াতে :
মায়ের বুকে দুধ কম থাকলে কালিজিরা খেলে দুধ আসে। প্রথমে ৫০০ মিলিগ্রাম কালিজিরা একটু ভেজে নিয়ে গুঁড়া করতে হবে। এই কালিজিরা গুঁড়া ৭/৮ চা-চামচ দুধের সাথে মিশিয়ে সকালে ও বিকালে দু’বার খেলে উপকার পাওয়া যাবে। এছাড়া প্রসব পরবর্তীকালে কালিজিরা ভর্তা খেলে জরায়ু স্বাভাবিক হয়ে যায়।
আর চুলকানি :
শরীরে চুলকানি হলে কালিজিরা ভাজা তেল গায়ে মাখলে চুলকানির উপশম হয়। ১০০ গ্রাম সরিষার তেলে ২৫/৩০ গ্রাম কালিজিরা ভেজে সেই তেল ঘেঁকে নিয়ে গায়ে ব্যবহার করলে চুলকানি সেরে যায়।
আমার বিছার হুলের জ্বালা-পােড়া :
বিছা গায়ে হুল ফোটালে খুব জ্বালা-পােড়া হয়। এই জ্বালা-পােড়া থেকে মুক্তি পেতে কালিজিরা বেটে হুল ফোটানাে জায়গায় লাগিয়ে দিতে হবে। খুব তাড়াতাড়ি জ্বালা-পােড়া কমে যাবে।
সর্দির কারণে মাথার যন্ত্রণা :
কাঁচা শ্লেষ্মায় খুব মাথা ব্যথা হয়। সেক্ষেত্রে কালিজিরা এক টুকরাে কাপড়ের পুটুলিতে নিয়ে নাক দিয়ে শুকতে হবে। মাঝে মাঝে পুটুলিকে একটু নেড়ে চেড়ে দিতে হবে। কালিজিরার গন্ধে মাথার যন্ত্রণা কমে যাবে।