আমাদের সকল পোস্ট ও ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে পেতে ফলো করুন :

Click Here
টিপস

ক্যারিয়ার শুরুর আগে যা আপনাকে জানতে হবে

তােমার জীবনের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য- স্কুলে এই বিষয়ে রচনা লেখেনি এমন শিক্ষার্থী কমই আছে। মােটামুটি নিশ্চিতভাবে বলা যায়, কেউ হতে চায় ডাক্তার, কেউ ইঞ্জনিয়ার, কেউ আবার শিক্ষক ইত্যাদি। শখ অনুযায়ী এই কিশাের বয়স থেকে শুরু করা উচিত ক্যারিয়ার পরিকল্পনা।

কারণ প্রয়ােজনীয় প্রস্তুতি নেয়ার আসল সময় এই বয়সটাই। যদি প্রস্তুতিটি সঠিক হয় তবে পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে যেতে পারলে বয়স বাড়ার সাথে সাথে পরিকল্পনাটির বাস্তব রূপলাভ সম্ভব। আর সেটা আমাদের প্রচেষ্টা, ইচ্ছা, আগ্রহ এবং প্রয়ােজনীয় দক্ষতার ওপরই নির্ভর করবে।

এক্ষেত্রে আপনার ব্যক্তিগত সামর্থ্য, দক্ষতা, আগ্রহ, রুচি, উৎসাহ, মূল্যবােধ, স্বপ্ন এবং গুণাবলিকে প্রাধান্য দিতে হবে। আর এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে সহায়তা করে ক্যারিয়ার পরিকল্পনা। লক্ষ্য নির্ধারন করতে হবে ধীরে সুস্থে , বুঝে শুনে , নিজের প্রয়ােজন , ইচ্ছা আর মেধা অনুযায়ী ।

আজকের এই পৃথিবীতে কোন পেশাই খারাপ নয়। কারাে যে বিষয়ে দক্ষতা আছে তার উচিত সে বিষয়েই পড়াশােনা করা । হতে পারে সেটা ক্রিকেটার , গায়ক , চিত্রশিল্পী বা অন্য যে কোন কিছু । প্রতিভার সাথে সাথে পরিশ্রম থাকলে যে কেউ উন্নতির চরম শীর্ষে পৌছাতে পারবে ।

তাই জীবনের গতিপথ নির্ধারন করতে হবে একদম শুরু থেকেই । লক্ষ্য স্থির করতে নিজ প্রয়ােজনটা জানাও খুবই গুরুত্বপুর্ন। ধরুন , আপনার পরিবার আর্থিকভাবে স্বচ্ছল নয় । পড়ালেখা চলাকালীন আপনাকে তাে সাপাের্ট দিতেই পারবে না বরং আপনাকেই পরিবারের দায়িত্ব নিতে হবে অতি অল্প বয়সে ।

তাহলে আপনাকে এমন একটা চাকুরী বেছে নিতে হবে যেখানে আপনি অল্প সময়েই অর্থ উপার্জন করতে পারেন। । এরকম কিছু পেশা হচ্ছে , সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী , নৌ বাহিনীর চাকরী , মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং , ডিপ্লোমা ইত্যাদি। তবে এধরনের পেশার প্রথম শর্ত শারীরিকভাবে আপনাকে ফিট থাকতে হবে।

যে শিক্ষার্থী অনার্স এবং মাস্টার্স ইতিহাস নিয়ে পড়াশুনা করেছে, পাশ করে বের হবার পরে বিশ্ববিদ্যালয় বা কোন কলেজের অধ্যাপকের চাকরি না পেলে তাকে অন্য কোন জেনারেল লাইনে যেতে হবে। এক্ষেত্রে তার চার বা পাঁচ বছরের পড়াশুনাটা, চাকরি ক্ষেত্রে তেমন কোন কাজেই আসবে না। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে এরকম আরও কিছু উদাহরণ দেয়া যেতে পারে- বাংলা, ভাষাতত্ত্ব, দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, আর্কিওলজি, মনােবিজ্ঞান, ইসলামের ইতিহাস প্রভৃতি। আর্থিক সামর্থ্যকে সমন্বয় করে এইসব সাবজেক্ট সিলেক্ট করাটা শিক্ষার্থীর জন্য জরুরী।

বর্তমান যুগ বানিজ্যের যুগ। আর বানিজ্য যতদিন থাকবে, অর্থনীতি, মার্কেটিং, ফিন্যান্স, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, ব্যবসায় প্রশাসন, ব্যাংকিং প্রভৃতি বিষয়ের চাহিদা দিনদিন বৃদ্ধি পেতে থাকবে। যারা বিভিন্ন বানিজ্যিক, শিল্পপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংকবীমাসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী অথবা কিছুদিন চাকরী করে নিজেই কোন বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা হবার স্বপ্ন দেখে; তারা এই বিষয়গুলি বিবেচনায় আনতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে সেশন জটে না পরলে, এই বিষয়ে অনার্স বা মাস্টার্স করেও মােটামুটি দ্রুত একটি চাকরি পাওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে একটি ব্যাপার উল্লেখ করা দরকার যে, সভ্যতা আর বানিজ্যের প্রসারের সাথে সাথে ইংরেজির প্রয়ােজনীয়তাটাও বিশ্বব্যাপী বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বাংলাদেশও এই প্রয়ােজনীয়তা কম নয়। দেশে ভাল ইংরেজী জানা একজন শিক্ষকের প্রয়ােজনীয়তা যে কতটুকু তা পাবলিক পরীক্ষাগুলিতে ইংরেজি বিষয়ে ফলাফল থেকেই সহজে বুঝা যায়। আমাদের দেশে বিসিএস-এর চাকরীর মর্যাদা এখনও মানুষের মনে অনেক উপরে।

অনেক শিক্ষার্থীই ভবিষ্যতে নিজেকে বিসিএস অফিসার হিসাবে দেখতে পছন্দ করে। যাদের টার্গেট বিসিএস, পাবলিক সার্ভিস কমিশনসহ সরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাকরি তারা বিসিএসভুক্ত সাধারণ কোন বিষয় উচ্চশিক্ষার জন্য বেছে নিতে পারে। এক্ষেত্রে, সাবজেক্টিভের তুলনায় অবজেক্টিভ বিষয় নির্বাচন বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে।

একটা সময় ছিল, যখন মা-বাবারা তাঁদের মেধাবী সন্তানকে ভবিষ্যতে ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে দেখতে পছন্দ করতেন। ব্যবসা-বানিজ্যের প্রসার হলেও এই দুটি বিষয়ের মূল্যায়ণ কিন্তু এখনও কমে যায়নি। তবে, ইঞ্জিনিয়ারিং-এর বেশ কিছু নতুন শাখার বিস্তার হয়েছে এবং একটির তুলনায় আরেকটি শাখার গুরুত্বের তারতম্য হয়েছে।

ইঞ্জিনিয়ারিং অথবা বিজ্ঞান-এর নতুন যে বিষয়গুলি আজকাল বেশী চাকরীর ক্ষেত্রে তৈরী হচ্ছে তা হলাে – কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, লেদার টেকনােলজি, টেলিকমিউনিকেশন, কমিউনিকেশন টেকনােলজি, সিরামিক টেকনােলজি, আরবান (নগর উন্নয়ন) ম্যানেজমেন্ট, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়ােটেকনােলজি, কৃষিবিজ্ঞান প্রভৃতি।

আরও কিছু বিষয়, যা বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষাপটে যথেষ্ট চাহিদার সৃষ্টি করছে এবং সামনের দিনগুলিতেও করবে তার দিকে লক্ষ্য করা যেতে পারে। হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, হােটেল ম্যানেজমেন্ট, ইন্টেরিয়র ডিজাইনিং, ফ্যাশন ডিজাইনিং, গনমাধ্যম ও সাংবাদিকতা, ফিল্ড এন্ড আ্যনিমেশন, গ্রাফিক্স ডিজাইনিং প্রভৃতি অন্যতম।

অনেকেই আজকাল এগুলির মধ্যে নিজের ঝোঁক অনুযায়ী কোন একটি বিষয় নিয়ে পড়াশুনা শেষ করে নিজেই কোন ফার্ম দিয়ে বসছেন। এছাড়া আইন। বিষয়ে পড়াশুনা শেষেও চাকরির পাশাপাশি পেশাগত চর্চা চালিয়ে যাওয়া যায়। বর্তমান প্রতিযােগিতামূলক চাকরির বাজারে নেটওয়ার্ক ছাড়া চাকরি পাওয়া দুঃসাধ্য।

তাই আপনাকে যােগাযােগমুখী হতে হবে। অনেক সময় দেখা যায়, একটা ভালাে চাকরির বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে, যার জন্য আপনি উপযুক্ত। কিন্তু বিজ্ঞাপনটি আপনার দৃষ্টিগােচর হয়নি, সে ক্ষেত্রে আপনি চাকরির সুযােগটি হারাবেন। তাই চাকরির তথ্যগুলাে পেতে গড়ে তুলুন নেটওয়ার্ক। এজন্য আপনি যে কাজগুলাে করতে পারেন- নিজের নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি করুন। সবার সাথে যােগাযােগ রাখার চেষ্টা করুন ।

এটি ক্যারিয়ার গঠনে সহায়ক

  • পুরনাে বন্ধুদের খোঁজখবর নিন। কেননা তাদের কাছে আপনি পেতে পারেন প্রয়ােজনীয় কোনাে তথ্য।
  • বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করুন। সাংগঠনিক যােগ্যতা বাড়াতে বিভিন্ন সংগঠনে যুক্ত হােন।
  • ক্যারিয়ার রিলেটেড সভা-সমিতি ও জব ফেয়ারগুলাের খোঁজ রাখুন।
  • চাকরি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ের ওপর কর্মশালায় অংশগ্রহণ করুন।
  • বিভিন্ন করপােরেট হাউজের ওয়েবসাইট ব্রাউজ করুন।
  • অনুভূতি বা আইডিয়া প্রকাশের সময় আপনার যােগাযােগ দক্ষতা কাজে লাগান।

Md. Mahabub Alam

I am a committed educator, blogger and YouTuber and I am striving to achieve extraordinary success in my chosen field. After completing Masters in Anthropology from Jagannath University, I am working as Chief Accounts Officer in a national newspaper of the country. I really want your prayers and love.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button