100 English Essay For Juniors

বিজ্ঞান, প্রকৌশল, ইতিহাস, ভাষা, সাহিত্য- অনেক বিষয় আছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলােতে। কোন বিষয়ে পড়া উচিত সে সিদ্ধান্ত নেওয়াই যেন কঠিন। গতানুগতিক বিষয়ে পড়াশােনার বাইরে বর্তমান প্রেক্ষাপটে নতুন নতুন বিষয়ে পড়াশােনা করে ক্যারিয়ার গড়ার সুযােগ রয়েছে। বহু বিষয়ের মাঝে বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যতিক্রমধর্মী ও সৃজনশীল কিছু বিষয় নিয়ে আমাদের এ আয়ােজন।

ক্রিমিনােলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স কোথায় কেন পড়বেন?

পরিবর্তনশীল সমাজের নতুন কাঠামােতে প্রতিনিয়ত উত্থান ঘটছে নতুন নতুন অপরাধের । অপরাধের ধরন ও প্রকৃতি পরিবর্তন হবার ফলে নতুন অপরাধ মােকাবিলার জন্য দরকার অপরাধ ও অপরাধী সম্বন্ধে পর্যাপ্ত জ্ঞান। দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ জঙ্গিবাদ, সাইবার ক্রাইম ও রাজনৈতিক অপরাধের বিরাট ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। জনগণের তুলনায় অপ্রতুল আইন প্রয়ােগকারী বাহিনী সামগ্রিক অপরাধ মােকাবিলায় বহুসংখ্যক সীমাবদ্ধতার সম্মুখীন হচ্ছে। সে দিক বিবেচনায় দক্ষ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবং দক্ষ জনগােষ্ঠী তৈরিতে ক্রিমিনােলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগ বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়াতে যাত্রা শুরু করে ২০০৩ সালে টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

আরো পড়ুন : ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট কোথায় কেন পড়বেন?

ডিপার্টমেন্টের স্বপ্নদ্রষ্টা অধ্যাপক ড. ইউসুফ শরিফ আহমদ খানের ইচ্ছা ছিল এই বিভাগের মাধ্যমে অপরাধ মােকাবিলায় ইউরােপীয় কিংবা আমেরিকান স্টাইলে এদেশে শিক্ষাদান। এবং তা বাস্তবায়ন করে সমাজ তথা রাষ্ট্রের অপরাধ নির্মূল করা। বর্তমানে বিভাগটি বাংলাদেশের একটি অনন্য পড়ার বিষয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৩-১৪ সেশন থেকে ক্রিমিনােলজি বিভাগ খােলা হয়। এখানে ব্যাচেলর অব অনার্স, মাস্টার্স, সঙ্গে রয়েছে এমফিল ও পিএইচডি করার সুযােগ। এছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে ক্রিমিনােলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের যাত্রা শুরু হয়।

যা শেখানাে হয়

ক্রিমিনােলজি একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি সাবজেক্ট। এখানে অনেক বিষয়কে একসঙ্গে পড়ানাে হয়। আর্কিওলজি, বায়ােলজি, ইকোনমিক্স, এপিস্টেমােলজি, সাইকোলজি, সাইকায়াট্রি, সেরােলজি, অ্যানথ্রোপলজি, রিসার্স মেথডলজি ছাড়াও ক্রাইম সিন ইনভেস্টিগেশন, ফরেনসিক অ্যানথ্রোপলজি, ফরেনসিক সাইকোলজি এবং সাইকায়াট্র, এন্টোমােলজি, ফরেনসিক সেরােলজি, জেন্ডার-ক্রাইম-ক্রিমিনাল জাস্টিস, টেরােরিজম অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ, ফরেনসিক অ্যান্ড ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন, এনভায়রনমেন্টাল ক্রাইম, ক্রাইম প্রিভেনশন, পলিটিক্স অ্যান্ড ক্রাইম, সাইবার ক্রাইম ইত্যাদি বিষয় পড়ানাে হয় ক্রিমিনােলজিতে।

ভবিষ্যৎ

এদেশে অপরাধের ধরন প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। মানবপাচার, গুপ্তহত্যা ও মাদককেন্দ্রিক অপরাধগুলাে ভিন্ন মাত্রা পাচ্ছে। এসব অপরাধের কারণ অনুসন্ধানে এগুলাে কমিয়ে আনতে অপরাধ নিয়ে ব্যাপকভাবে গবেষণা দরকার। সেই সঙ্গে দরকার যথাযথ জ্ঞানসম্পন্ন ক্রিমিনােলজিস্ট ও নিরাপত্তা বাহিনী। আর সেটি নিশ্চিত করতে হলে ক্রিমিনােলজি শিক্ষার বিকল্প নেই।

আরো পড়ুন : নাটক ও নাট্যতত্ত্ব কোথায় কেন পড়বেন ?

যেসব আইএনজিও এবং এনজিও নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছে সেগুলােতে ক্রিমিনােলজিস্টদের কাজ করার সুযােগ রয়েছে। এছাড়া অপরাধ প্রবণতা ও ধরন যেভাবে বাড়ছে তাতে করে অদূর ভবিষ্যতে প্রাইভেট সিকিউরিটি ফোর্সের দরকার হবে। সেক্ষেত্রে ক্রিমিনােলজির ছাত্রদের চাহিদা বাড়বে।

যাদের পড়া উচিত

অপরাধ, রহস্য সম্পর্কে রয়েছে যাদের অনেক আগ্রহ, যারা একটু রােমাঞ্চপ্রিয় কিংবা গতানুগতিক বিষয়ের বাইরে পড়ালেখা করতে চান, তারা পড়তে পারেন ক্রিমিনােলজি কিংবা অপরাধবিজ্ঞান বিষয়ে। যদি কেউ সত্যটি জানার এবং কোনাে মামলার ঘটনা জানতে আগ্রহী হন তবে তিনি ক্রিমিনােলজি পড়তে পারেন।

কর্মক্ষেত্র

সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে যেমন অপরাধ বিশেষজ্ঞের চাহিদা আছে, তেমনি চাহিদা আছে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও। পুলিশ, প্রশাসন, এনএসআই, স্পেশাল ব্রাঞ্চসহ সরকারের বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে নিয়ােগের ক্ষেত্রে এ বিষয়ে ডিগ্রিধারীদের অগ্রাধিকার রয়েছে। বেসরকারি গােয়েন্দা সংস্থা, বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, এনজিও, মানবাধিকার সংস্থা, সরকারি বেসরকারি ব্যাংকসহ অনেক ক্ষেত্রেই রয়েছে কাজের সুযােগ।

জেলখানার জেলার, দুর্নীতি ও অপরাধ দমন কমিশন, আইন ও মানবাধিকার সংস্থা, উন্নয়ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাতে কাজ করার সুযােগ আছে এই বিভাগের শিক্ষার্থীদের। বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গড়ে ওঠা ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টে এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা কাজ করছে কৃতিত্বের সাথে। তাছাড়া সাধারণভাবে বিসিএস, অন্যান্য সরকারি বেসরকারি চাকরি তাে আছেই। উচ্চ শিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রেও সুযােগ রয়েছে এ বিভাগের শিক্ষার্থীদের।

Related Post

Leave a Comment