![100 English Essay For Juniors](https://bcspreparation.net/wp-content/uploads/2022/09/Bcs-Preparation-1-780x470.png)
দাও ফিরে সে অরণ্যে লও এ নগর
সভ্যতা মানুষকে যেমন অনেক কিছু দিয়েছে, তেমনি কেড়ে নিয়েছে অনেক কিছু। পরিভােগের নানা উপকরণ মানুষের জীবনে এখন ছড়ানাে, কিন্তু নগর সভ্যতার জঠরে বস্তুভারের বেড়াজালে মানুষ হারিয়েছে নিসর্গবেষ্টিত জীবনের শান্ত সৌন্দর্য। হারিয়েছে প্রকৃতির মুক্ত অঙ্গনে দেহ-মনের অবাধ ও স্বচ্ছন্দ বিকাশের সুযােগ। মানুষের জীবনে এসেছে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত জটিলতা। আধুনিক সভ্যতার পাষাণ-পিঞ্জরে অবরুদ্ধ মানুষ মুক্তি প্রত্যাশায় আবার উন্মুখ হয়ে উঠেছে প্রকৃতিচালিত হৃত জীবনকে ফিরে পাওয়ার জন্য। আধুনিক নগর সভ্যতা মানবজীবনে অনেক অগ্রগতি এনেছে এ কথা সত্য, কিন্তু এ সভ্যতা আজ মানুষের হৃদয়বৃত্তির ওপর এমনভাবে চেপে বসেছে যে, মানুষ হয়ে পড়ছে ক্রমেই হৃদয়হীন নিষ্ঠুর। এ সভ্যতা মানুষকে করে তুলেছে পুরিভােগমুখী, উচ্চাভিলাষী, আত্মকেন্দ্রিক ও স্বার্থসর্বস্ব। মানুষের জীবন থেকে মানবিকতাবােধের অবসান ঘটছে। মানুষ হয়ে উঠছে অনেক বেশি যান্ত্রিক। সমাজ-জীবনে স্বার্থসচেতনতা হয়ে উঠছে ক্রমবর্ধমান। মানুষের পরিভােগ চাহিদা হয়ে উঠছে আকাশচুম্বী। মানুষে মানুষে বৈষম্য হচ্ছে প্রকট। মানব সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রাধান্য ঘটছে কুটিলতা ও কপটতার। সব কিছুকে বিচার করা হচ্ছে ব্যক্তিগত স্বার্থের মানদণ্ডে। মানবসভ্যতার এই দুঃসহ অবরােধ থেকে মুক্তি পেতে চান হৃদয়বান মানুষ। তাঁরা জটিলতাহীন শান্ত সমাহিত হৃত জীবনের স্বপ্ন দেখেন। জীবনের সৌন্দর্য ফিরে পাওয়ার জন্য তারা ফিরে যেতে চান প্রকৃতিনির্জ প্রসন্ন, উদার, শান্ত জীবনে। যে জীবনে নেই ভােগের পঙ্কিলতা, নেই লােভের বিকার। মাটির কাছাকাছি সে জীবনে তারা ফিরে পেতে চান স্বেদের গন্ধ আর শ্রমের স্পন্দন। পণ্যবিলাসী জীবনের চেয়ে সরল, সহজ জীবন তাঁদের কাছে অনেক বেশি আকর্ষণীয়। সেই মানসিক প্রশান্তিময় জীবনে ফেরার জন্য হৃদয়ানুভূতিশীল মানুষ আজ ব্যাকুল হয়ে উঠেছে।
এই বিভাগের আরো ভাবসম্প্রসারণ :
- কীর্তিমানের মৃত্যু নাই
- পথ পথিকের সৃষ্টি করে না পথিকই পথ সৃষ্টি করে
- অর্থসম্পত্তির বিনাশ আছে কিন্তু জ্ঞানসম্পদ কখনাে বিনষ্ট হয় না
- অসি অপেক্ষা মসী অধিকতর শক্তিমান
- অনুকরণের দ্বারা পরের ভাব আপন হয় না অর্জন না করলে কোন বস্তুই নিজের হয় না
- অর্থই অনর্থের মূল
- অধর্মের ফল হইতে নিষ্কৃতি নাই
- মানুষের মৃত্যু হলে তবুও মানব থেকে যায়