আমাদের সকল পোস্ট ও ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে পেতে ফলো করুন :

Click Here
টিপস

নাটক ও নাট্যতত্ত্ব কোথায় কেন পড়বেন ?

বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যতিক্রমধর্মী ও সৃজনশীল কিছু বিষয় নিয়ে ধারাবাহিক আয়ােজনের দ্বিতীয় পর্বে থাকছে ‘নাটক ও নাট্যতত্ত্ব’।

নাট্যতত্ত্ব শিল্প সংস্কৃতির একটি শাখা। ইদানীং অনেক শিক্ষার্থীই নাট্যকলা বা নাট্যতত্ত্বে পড়াশােনা করতে আগ্রহী। বর্তমান বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২০০-১৩০০ শিক্ষার্থী এ বিষয়ে পড়াশােনা করছেন। নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন এবং নাট্যশিক্ষক ড. আফসার আহমদের হাত ধরে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাতিষ্ঠানিক নাট্যশিক্ষা শুরু হয়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮৬-১৯৮৭ শিক্ষাবর্ষে প্রথম স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিষয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির মাধ্যমে। যদিও ১৯৮৬-১৯৮৭ শিক্ষাবর্ষের পূর্বেই উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে নাটকের কোর্স পড়ানাে হতাে। অধ্যাপক জিয়া হায়দার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ১৯৬৯ সালে শিক্ষক হিসেবে যােগদানের মাধ্যমে বাংলা বিষয়ের একটি অংশ হিসেবে নাট্যকলার তত্ত্বগত বিষয়াবলি পড়াতেন। তার প্রচেষ্টায় পরবর্তীতে চারুকলা বিভাগে নাট্যকলা বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়।

আরো পড়ুন : ক্রিমিনােলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স কোথায় কেন পড়বেন?

১৯৯১-১৯৯২ শিক্ষাবর্ষে নাট্যকলা শাখায় প্রথম স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয় এবং তা চলমান থাকে ১৯৯৬-১৯৯৭ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত। অতঃপর ২০০৯ সালে স্বতন্ত্রভাবে নাট্যকলা বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মাধ্যমে উক্ত বিভাগে ২০০৯-২০১০ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। ইতােমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক সৈয়দ জামিল আহমেদ এর প্রচেষ্টায় নাট্যকলা ও সংগীত বিভাগে নাট্যকলা বিষয়ে ১৯৯৪-১৯৯৫ শিক্ষাবর্ষে প্রথম দুই বছর মেয়াদি স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। তার পূর্বে ১৯৮৯ সাল থেকে কলা অনুষদে সহায়ক কোর্স হিসেবে নাট্যকলা পড়ানাে হতাে।

অতঃপর ১৯৯৭-১৯৯৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতক (সম্মান) চালু করা হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ও ২০০০ সালে প্রফেসর সফিকুন্নবী সামাদী একাডেমিক নাট্যব্যক্তিত্ব ফরহাদ জামান পলাশকে নিয়ে নাট্যকলা ও সংগীত বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। নাট্যকলা শাখায় স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয় ২০০০-২০০১ শিক্ষাবর্ষ থেকে।

অতঃপর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকলা বিভাগে প্রথম ২০১০-২০১১ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। সর্বশেষ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে চালু করা হয় নাট্যকলা বিভাগ। এই বিভাগটিতে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের এম.সি.কিউ পরীক্ষায় এবং পরে একটি ব্যবহারিক ভাইভায় অংশ নিতে হয়।

নামকরণ- ঢাবি ও জাককানইবি : থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ; জাবি : নাটক ও নাট্যতত্ত্ব; চবি, রাবি, জবি : নাট্যকলা।
সিট সংখ্যা- ঢাবি : ২৫, জাবি : ৩৬, চবি : ৫, রাবি : ২৫, জবি : ৪০, জাককানইবি : ২৫।

যা পড়ানাে হয়

নাট্যতত্ত্ব বিভাগে নাটকের ইতিহাস, বিশ্বনাটকের ইতিহাস, বাংলা নাটকের ইতিহাস, নাটকের প্রকারভেদ, অভিনয়ের প্রস্তুতি, অভিনয়ের কৌশল, মঞ্চ ও আলােক পরিকল্পনা, নাট্য প্রযােজনা, মেকাপ ও মুখােশ, নাট্য ব্যবস্থাপনা, আধুনিক নাটক, টিভি নাটক, রেডিও ও টেলিভিশন প্রযােজনা, নাটক রচনার শিল্প কৌশল ইত্যাদি বিষয় পড়ানাে হয়।

আরো পড়ুন : ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট কোথায় কেন পড়বেন?

ভবিষ্যৎ ও উচ্চশিক্ষা

মানুষ মাত্রই সংস্কৃতিপ্রেমী। নাট্যকলা বা নাট্যতত্ত্ব বিশ্ব সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। পৃথিবীর সব দেশেই নাট্যচর্চা হয়। এ পথে যেমন রয়েছে সামাজিক পরিচিতি তেমনি রয়েছে আর্থিক প্রাচুর্য। ভালাে নাটক, সিনেমা যেমন মানুষ বারবার দেখে তেমনি এগুলাে হয় ব্যাবসা সফল। বাংলাদেশে নাটক, সিনেমা চর্চার প্রচুর সুযােগ রয়েছে। তাই এ বিষয়ের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। উচ্চ শিক্ষার জন্য কমনওয়েলথ স্কলারশিপ, রাশিয়ান স্কলারশিপসহ বিদেশে পড়ার সুযােগ রয়েছে।

ক্যারিয়ার কোথায়?

বাংলা সিনেমা অস্কার, কান উৎসবে যাচ্ছে। সিনেমা, নাটকের বাজেটও দিন দিন বাড়ছে। সেই সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে সরকারি পৃষ্ঠপােষকতা। তাই প্রযােজক, নির্মাতা, অভিনেতাসহ বিভিন্ন টেকনিক্যাল পদে দেশে বিদেশে কাজ করার সুযােগ রয়েছে। বিভিন্ন মিডিয়া, টিভি চ্যানেলেও আছে ক্যারিয়ার গড়ার সুযােগ। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, শিশু একাডেমিসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নাটকের শিক্ষক হিসেবে ক্যারিয়ার গঠন করা যাবে। তাছাড়া সাধারণভাবে বিসিএস, সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক, বীমাসহ অন্যান্য চাকরির সুযােগতাে আছেই।

যাদের পড়া উচিত

যাদের সংস্কৃতির প্রতি টান আছে, সংস্কৃতি চর্চার ইচ্ছা আছে, অভিনয়, নৃত্য, বাদ্যযন্ত্র যাদের ভালাে লাগে, তারা নাট্যতত্ত্ব নিয়ে পড়াশােনা করতে পারেন । আমাদের সমাজে নাটক, সিনেমার প্রভাব অপরিসীম। যারা নাটক সিনেমার মাধ্যমে সমাজে কোনাে বার্তা দিতে চান, সমাজ গঠন ও সংস্কারে আগ্রহী হন, তাদের জন্যই উপযুক্ত বিষয় নাটক ও নাট্যতত্ত্ব।

Md. Mahabub Alam

I am a committed educator, blogger and YouTuber and I am striving to achieve extraordinary success in my chosen field. After completing Masters in Anthropology from Jagannath University, I am working as Chief Accounts Officer in a national newspaper of the country. I really want your prayers and love.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button