নেতৃত্বে দক্ষতা লাভের উপায় : একজন নেতার উদ্যোগ, তদারকি, উৎসাহ ও অনুপ্রেরণী কর্মীদের মধ্যে কর্মস্পৃহা জাগ্রত করে ও কার্য সম্পাদনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। নেতৃত্ব কর্মক্ষেত্রের সর্বোচ্চ অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নেতৃত্বের এমন কিছু অপরিহার্য বিষয় নিচে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলাে:
ভালাে দলনেতা আন্তরিক হন এবং প্রশংসার মাধ্যমে তার কর্মীদের উৎসাহিত করেন। নেতাকে সব সময় তার অধস্তনরা অনুসরণ করে। তাই তাকে হতে হয় ধৈর্যশীল, সৎ ও ন্যায়পরায়ণ।
একজন নেতাকে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের সাধারণ ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান।এবং অভিজ্ঞতার অধিকারী হতে হয়। অন্যের থেকেও শিক্ষা নিতে হয়। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে জ্ঞান অন্বেষণে সদা তৎপর থাকতে হয়।
একজন ভালো দলনেতার প্রধান গুণ হলাে লক্ষ্য ও কৌশল সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা। এক্ষেত্রে কর্মীর কাজ নির্দিষ্ট করে দেবার পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে ছােট ছােট কাজের লক্ষ্য নির্ধারণ করে দিতে হয়।
ভালাে ও দক্ষ দলনেতা নিজের অভিজ্ঞতার সাথে তার দলের সদস্যদের চিন্তাভাবনা সমন্বয় করে পরিকল্পনা গ্রহণ করেন এবং দলকে এগিয়ে নেয়ার জন্য কাজ করেন।
সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা নেতৃত্বের অন্যতম অংশ। তাই নেতাকে সকলের সাথে কথা বলে তাদের সমস্যাগুলাে বুঝে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতা অর্জন করতে হয়।
একজন দলনেতাকে অধস্তনদের প্রতি সহযােগিতার মনােভাব রাখতে হয়। তাদেরকে কাজে উৎসাহ দিতে হয়। এছাড়াও প্রয়ােজনে তিনি প্রতিষ্ঠানের অন্য দলগুলােকেও সহযােগিতা করেন।
দলনেতাকে তার কর্মীদের বুঝতে ভালো শ্রোতা হতে হয়। আবার কর্মীদের মাঝে তার জ্ঞানকে সহজেই শেয়ার করতে ভালাে শিক্ষক হতে হয়। যাতে কর্মীরাও দক্ষ হয়ে উঠতে পারে।
যােগাযােগ দক্ষতা নেতার একটি গুরুত্বপূর্ণ গুণ, যা সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কাক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়তা করে। ঝুঁকি গ্রহণের ক্ষমতা আয়ত্ত করা
প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে নেতাকে দায়-দায়িত্ব নিয়ে ঝুঁকি গ্রহণ করতে হয়।তাই তাকে এ ক্ষমতা আয়ত্ত করতে হয়।
সঠিক নেতৃত্বই মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত করে; ব্যক্তি ও কর্মজীবনে মানুষকে দান করে সর্বোচ্চ সাফল্য। কানাডিয়ান বংশােদ্ভূত মার্কিন জনপ্রিয় বক্তা; প্রশিক্ষক লেখক ব্রায়ান ট্রেসি তার বিখ্যাত Leadership বইয়ে সঠিক নেতৃত্বের কিছু অপরিহার্য বিষয় উল্লেখ করেছেন। যেগুলাে হলাে—
নেতাকে সব ধরনের পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হয়। প্রতিষ্ঠানে বিভিন্নমুখী প্রয়ােজনে তাকে বিকল্প কর্মপন্থা উদ্ভাবনসহ দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়।
আবেগ ব্যক্তিত্বকে দুর্বল করে দেয়। একজন সফল নেতাকেঅনাকাক্ষিত পরিস্থিতির মুখােমুখি হলে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়।
পূর্বানুমান সঠিক হলে পরিকল্পনা প্রচ্ছন ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় সুফল পাওয়া যায়। তাই নেতাকে দূরদর্শী হতে হয়।
নেতাকে দলের সকলের নির্বিঘ্নে কাজ করার পরিবেশ সৃষ্টিতে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা নিতে হয়। তিনি অধস্তনদের মত প্রকাশের সুযােগ সৃষ্টিতেও ভূমিকা রাখেন।
প্রতিষ্ঠানের অগ্রযাত্রা সমুন্নত রাখতে নেতার সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা থাকতে হয়। একজন সফল নেতাকে দলকে সঠিক দিক নির্দেশনায় সফলতার পথে এগিয়ে নিতে হয়।
কোনাে কিছুতে একটি সাধারণ কার্যপদ্ধতি মেনে চলা স্বাভাবিক, কিন্তু সেই সাথে কীভাবে কাজ করলে আরাে ভালাে ফল আসবে- সফল নেতাকে এটাও বিবেচনায় রাখতে হয়।
নেতৃত্ব শুধু কর্মজীবনে নয় ব্যক্তিজীবনেও সাফল্য লাভে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই ওপরের বিষয়গুলি আয়ত্ত করতে পারলে সঠিক নেতৃত্ব দিয়ে কাক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানাে সম্ভব হয়।
Leave a Comment