২০১৯ সালের ২৪ জুলাই বরিস জনসনের নেতৃত্বে যুক্তরাজ্যের কনজারভেটিভ পার্টি জাতীয় নির্বাচনে বড় বিজয় নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। দলীয় মন্ত্রী ও এমপিদের সমর্থন হারিয়ে ৭ জুলাই ২০২২ পদত্যাগ করেন। বরিস জনসন। তবে দলের নতুন নেতা নির্বাচন পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ চালিয়ে যাবেন। কিন্তু কীভাবে এই পরিণতিতে পৌঁছালেন জনসন? এর সম্ভাব্য পাঁচ কারণ উল্লেখ করা হলাে—
২৯ জুন ২০২২ পার্লামেন্টে কনজারভেটিভ পার্টির তৎকালীন ডেপুটি চিফ হুইপ ক্রিস পিনচার লন্ডনে একটি সংরক্ষিত ক্লাবে যান এবং তাঁর ভাষায়, সেদিন তিনি অনেক বেশি পান করেছিলেন। সেখানে দুজন পুরুষকে যৌন নিপীড়নের অভিযােগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। এর জের ধরে তার বিরুদ্ধে। কয়েক বছরের পুরােনাে একগাদা যৌন অসদাচরণের অভিযােগও বেরিয়ে আসে। ৪ জুলাই ২০২২ বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী জনসন পিনচারের বিরুদ্ধে তােলা অন্তত একটি আনুষ্ঠানিক অভিযােগের বিষয়ে জানতেন। এরপর বরিস জনসন স্বীকার করেন, ২০১৯ সালে। পিনচারের বিষয়ে তাকে জানানাে হয়েছিল। সব জেনেও পিনচারকে ডেপুটি চিফ হুইপের দায়িত্ব দেওয়ায় ক্ষমা চান তিনি।
২০২২ সালের এপ্রিলেই বরিস জনসনকে জরিমানা গুনতে হয়েছে ২০২০ সালে যুক্তরাজ্যজুড়ে কড়া লকডাউন কার্যকর থাকা অবস্থায়। জন্মদিনের উৎসব আয়ােজন করে। নিয়ম ভাঙার কারণে। তিনিই প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যাকে পদে থাকা অবস্থায় আইন ভঙ্গের জন্য জরিমানা দিতে হয়েছে।
বরিস জনসনের পদত্যাগের পেছনে একটি কারণ যুক্তরাজ্যে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি। চলতি বছর দেশটিতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ১ শতাংশে।
২০২১ সালের অক্টোবরে হাউস অব কমনস কমিটি তৎকালীন কনজারভেটিভ এমপি ওয়েন প্যাটারসনকে ৩০ দিনের জন্য বহিষ্কারের সুপারিশ করে। কমিটির ভাষ্য ছিল, প্যাটারসন অর্থের বিনিময়ে অবৈধভাবে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে সুযােগসুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তবে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কনজারভেটিভরা প্যাটারসনের বিরুদ্ধে এই বহিষ্কারাদেশ স্থগিত রাখার পক্ষে ভােট দেয়। শেষ পর্যন্ত প্রতিবাদের মুখে ওয়েন প্যাটারসন পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। পরে প্রধানমন্ত্রী জনসন স্বীকার করেন যে এ বিষয় সামাল দিতে গিয়ে তিনি দুর্ঘটনা ঘটিয়ে বসেছিলেন।
‘গেট ব্রেক্সিট ডান’ বা ‘ব্রেক্সিট কার্যকর করা হােক’–এই সরল নীতির ওপর ভর করে সর্বশেষ পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে প্রতিদ্বন্দ্বীদের পরাজিত করেছিলেন বরিস জনসন। অথচ তারপর থেকে ডাউনিং স্ট্রিটে মনােযােগে ঘাটতি ও নতুন ভাবনাচিন্তার অভাব দেখা দেয় বলে জনসনের সমালােচকদের ভাষ্য। এর পরিপ্রেক্ষিতে বরিস জনসন সরকার গঠনের পর থেকে ব্রিটেনের বিভিন্ন উপনির্বাচনেও কনজারভেটিভদের পরাজয় অব্যাহত রয়েছে।
Leave a Comment