মাথা ব্যাথার ঔষধ নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। যাদের মাথা ব্যাথার সমস্যা আছে তাদের জন্য লেখাটি খুবই উপকারী হবে। তো চলুন মাথা ব্যাথার কিছু ঔষধ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
নাপা এক্সটেন্ড ট্যাবলেট | প্যারাসিটামল |
৬৬৫ মি.গ্রা. | বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড |
প্যারাসিটামল জ্বর, সর্দি জ্বর, ইনফ্লুয়েঞ্জা, মাথা ব্যথা, দাঁতে ব্যথা, কানে ব্যথা, শরীর ব্যথা, স্নায়ু প্রদাহজনিত ব্যথা, ঋতুস্রাবজনিত ব্যথা, মচ্কে যাওয়া ব্যথা, অন্ত্রে ব্যথা, পিঠে ব্যথা, অস্ত্রোপচার পরবর্তী ব্যথা, প্রসব পরবর্তী ব্যথা, প্রদাহজনিত ব্যথা এবং শিশুদের টিকা পরবর্তী ব্যথায় কার্যকরী। এটি বাতজনিত ও অস্টিওআর্থ্রাইটিসজনিত ব্যথা এবং অস্থিসংযোগ সমূহের অনমনীয়তায় কার্যকরী।
প্যারাসিটামলের ব্যথানাশক এবং জ্বর উপশমক গুণাবলীর সাথে কিছুটা প্রদাহবিরোধী কার্যকারিতাও রয়েছে। প্যারাসিটামল (অ্যাসিটামিনোফেন) প্রাথমিকভাবে সিএনএসে কাজ করে বলে মনে করা হয়, ইহা প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন এর সিনথেসিস কে ইনহিবিট করার মাধ্যমে COX-1, COX-2, and COX-3 এনজাইম এর সিনথেসিস কে ইনহিবিট করে। প্যারাসিটামল একটি প্যারা এমিনোফেনল ডেরিভেটিভ, যার ব্যথানাশক এবং জ্বর উপশমক গুণাবলীর সাথে কিছুটা প্রদাহ বিরোধী কার্যকারিতা রয়েছে। প্যারাসিটামল সর্বাপেক্ষা বেশি ব্যবহৃত এবং সর্বাপেক্ষা নিরাপদ ও দ্রূত কার্যকরী ব্যথানাশকদের একটি। এটি অধিক সহনশীল ও এসপিরিনজনিত অনেক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ামুক্ত।
ট্যাবলেট :
প্রাপ্ত বয়স্ক: ১-২ টি ট্যাবলেট ৪-৬ ঘন্টা পর পর দিনে সর্বোচ্চ ৮ টি ট্যাবলেট।
শিশু (৬-১২ বছর): আধা থেকে ১টি দিনে ৩-৪ বার।
সিরাপ এবং সাসপেনশন :
শিশু (৩ মাসের নীচে): ১০ মি.গ্রা. হিসাবে (জন্ডিস থাকলে ৫ মি.গ্রা. হিসাবে) দিনে ৩-৪ বার।
৩ মাস-১ বছরের নীচে: ১/২ থেকে ১ চা চামচ দিনে ৩-৪ বার।
১-৫ বছর: ১-২ চা চামচ দিনে ৩-৪ বার।
৬-১২ বছর: ২-৪ চা চামচ দিনে ৩-৪ বার।
প্রাপ্তবয়স্ক: ৪-৮ চা চামচ দিনে ৩-৪ বার।
এক্স আর ট্যাবলেট :
প্রাপ্ত বয়স্ক এবং ১২ বছরের ঊর্ধ্বে শিশুদের ক্ষেত্রে: ২টি ট্যাবলেট প্রতি ৮ ঘন্টা পরপর; সর্বোচ্চ মাত্রা দৈনিক ৪ গ্রাম (৬ টি ট্যাবলেট)।
দীর্ঘ মেয়াদী ক্রমাগত চিকিৎসার ক্ষেত্রে:দিনে ২.৬ গ্রাম (৪টি ট্যাবলেট)-এর বেশি সেবন করা উচিত নয়।
সাপোজিটরি :
৩ মাস- ১ বছরের নীচে: ৬০-১২০ মি.গ্রা. দিনে ৪ বার।
১-৫ বছর: ১২৫-২৫০ মি.গ্রা. দিনে ৪ বার।
৬-১২ বছর বয়সের শিশুদের জন্য: ২৫০-৫০০ মি.গ্রা. দিনে ৪ বার।
প্রাপ্ত বয়স্ক ও ১২ বছরের বেশী বয়সের শিশুদের জন্য: ০.৫-১ গ্রাম দিনে ৪ বার।
পেডিয়াট্রিক ড্রপস্:
৩ মাস বয়স পর্যন্ত: ০.৫ মি.লি. (৪০ মি.গ্রা.), দিনে ৪ বার।
৪-১১ মাস বয়স পর্যন্ত: ১ মি.লি. (৮০ মি.গ্রা.), দিনে ৪ বার।
১-২ বছর বয়স পর্যন্ত: ১.৫ মি.লি. (১২০ মি.গ্রা.), দিনে ৪ বার।
* চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক ঔষধ সেবন করুন’
বারবিচুরেট জাতীয় ও বিষন্নতারোধী ট্রাইসাইক্লিক জাতীয় ঔষধ গ্রহণকারী এবং এলকোহল পানকারী রোগীদের ক্ষেত্রে অধিকমাত্রায় সেবন করলে প্যারাসিটামলের বিপাক কমে যেতে পারে। এলকোহল, মাত্রাধিকভাবে সেবন কৃত প্যারাসিটামল দ্বারা সৃষ্ট লিভারের বিষক্রিয়া আরো বাড়িয়ে দিতে পারে। খিচুনিবিরোধী ঔষধ এবং স্টেরয়েডজাতীয় জন্মনিরোধকের দীর্ঘ মেয়াদী ব্যবহার লিভার এনজাইমকে প্রণোদিত করে; ফলে এ জাতীয় ঔষধের সাথে একত্রে গ্রহণে ‘ফার্স্ট-পাস’ বিপাক ত্বরান্বিত হয় এবং প্যারাসিটামলের কার্যকরী মাত্রা অর্জন ব্যহত হয়।
প্যারাসিটামল বা এটির কোন উপাদানের প্রতি অতিসংবেদনশীল রোগীদের ক্ষেত্রে ইহা প্রতিনির্দেশিত।
রক্তের উপাদানের উপর যৎসামান্য প্রভাব থাকলেও সাধারণত প্যারাসিটামলের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া খুবই কম। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অগ্নাশয়ের প্রদাহ, চামড়ায় ফুসকুড়ি ও অন্যান্য এলার্জি দেখা দিতে পারে।
US FDA অনুযায়ী প্রেগনেন্সী ক্যাটাগরী ‘B’ শ্রেণীভুক্ত ঔষধ। ঔষধটি গর্ভাবস্থায় কেবল সুনির্দিষ্টভাবে প্রয়োজন হলেই ব্যবহার করা উচিত।
কিডনি ও লিভার বৈকল্যতায় প্যারাসিটামল সতর্কতার সাথে ব্যবহার করা উচিত। লিভারের উপর প্রভাব আছে এমন ঔষধের সাথে প্যারাসিটামল ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।
অত্যধিক মাত্রায় প্যারাসিটামল গ্রহণ করলে প্রথম ২৪ ঘন্টায় ফ্যাকাসে ভাব, বমি বমি ভাব বা বমি, ক্ষুধামন্দা, লিভারের ক্ষতি এবং পেটে ব্যথা প্রভৃতি লক্ষণ দেখা যায়। অত্যধিক মাত্রায় প্যারাসিটামল গ্রহণে আনুমানিক ১২-৪৮ ঘন্টার মধ্যে লিভার বৈকল্য দেখা দিতে পারে। প্যারাসিটামলের মাত্রাধিক্যের ফলে শর্করা বিপাকে অস্বাভাবিক স্বল্পতা এবং মেটাবোলিক এসিডোসিস দেখা দিতে পারে।
Non opioid analgesics
আলো ও তাপ থেকে দূরে শুষ্ক স্থানে রাখুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।
সূত্র : Medex
টাফনিল ট্যাবলেট | টলফেনামিক এসিড |
২০০ মি.গ্রা. | এস কে এফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড |
টফেনামিক এসিড বিশেষভানে মাইগ্রেন জনিত মাথাব্যথা, পােস্ট-অপারেটিভ ব্যথা, বেদনানাশক ও জ্বরে বেদনানাশক হিসাবে নির্দেশিত।
টলফেনামিক এসিড এম-(২-মিথাইল-৩-ক্লোরফিনাইল) এন্থ্রানিলিক এসিড) ফেনামেট গ্রুপ এর সদস্য এবং এটি সাইকো-অক্সিজিনেজ এনজাইমের শক্তিশালী নিবোধক। এভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রদাহজনক মধ্যস্ততাকারীর সংশ্লেষণ যেমন, থ্রমবক্সেন (টিএক্স) বি২ এবং প্রােস্টাগ্লান্ডিন (পিজি) ই২ কে বধা দেয়। ফোলা, বাথা এবং প্রদাহ ইত্যাদির জন্য প্রােস্টাগ্লান্ডিন দায়ী। এটি প্রােস্টাগ্লান্ডিনকে কেবল বাঁধা দেয় না, এটি প্রােস্টাগ্লান্ডিন বিসেন্টরকেও এন্টাগােনাইজ করে।
ফার্মাকোকাইনেটিক বৈশিষ্ট্য: শোষণ: গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল ট্রাক্ট থেকে সরাসরি শােষিত হয়। সর্বোচ্চ রক্তরস ঘনত্ব অর্জন করতে সময় লাগে ৬০-৯০ মিনিট। বায়ােএভেলেবিলিটি: ৮৫%। বিতরন: প্রোটিন-বাইন্ডিং: ৯৯%। প্লাজমা হাফ-লাইফ: ২ ঘন্টা। বিপাক: যকৃতে বিপাক হয়, এন্টারােহেপাটিক সংবহন এর মধ্য দিয়ে । নিঃসরন: প্রস্রাব (৯০%) এবং মল এ নিষ্কাশিত হয়।
তীব্র মাইগ্রেনের ব্যথায়: ২০০ মি.গ্রা. প্রথম উপসর্গ প্রদর্শিত হলে, ১-২ ঘন্টা পর এবার পুনরাবৃত্তি হতে পারে।
হালকা থেকে মধ্যম ব্যথায়: ১০০-২০০ মি.গ্রা. দিনে তিনবার।
বৃক্ক অসমকার্যকারিতা: ডােজ সমন্বয় প্রয়ােজন হতে পারে।
প্রকট বৃক্ক অসমকার্যকারিতা: এড়িয়ে চলুন।
শিশু: শিশুদের কানা সঠিক ডোজ এখনাে প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
টলফেনামিক এসিড খাদ্যের সঙ্গে গ্রহণ করা উচিত। খাওয়ার সময় বা খাওয়ার পর পানি পান করুন।
* চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক ঔষধ সেবন করুন’
মেটাক্লপ্রমাইড এবং ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রক্সাইড টলফেনামিক এসিডের শােষণ বাড়ায় কিন্তু এলুমিনিয়াম হাইড্রেক্সাইড শোষণ কমায়। এন্টিকোয়াগুলেন্ট এবং অন্যান্য NSAID’s এর সঙ্গে টলফেনামিক এসিড ব্যবহারে রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়ে এটা লুপ ডাইইউরেটিকস, বিটা-ব্লকার এবং এসিই ইনহিবিটর্স এর উচ্চ রক্তচাপ রােধী ক্রিয়া কমায়। যখন একসাথে নেয়া হয় এটি লিথিয়াম, মিথট্রিক্সেট ও কার্ডিয়াক গ্লাইকোসাডের রক্তরস ঘনতৃ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এটি এসিই ইনহিবিটর্স, সাইক্রোম্পােরিন, টেক্রোলিমাস অথবা ডাইইউরেটিকস সহযােগে খেলে নেফ্রটক্সিসিটি ঘটাতে পারে।
পাকস্থলীর ক্ষত বা অন্ত্রে রক্তপাত জনিত সমস্যা থাকলে। গুরুতর হৃদযন্ত্র, বৃক্ক বা যকৃত বৈকল্যের ক্ষেত্রে।
বিশেষ করে পুরুষদের ডিসইউরিয়া: এছাড়া ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব, এপিগ্যাস্ট্রিক ব্যাথা, বমি, ক্ষুধামন্দা, ইরিদমিয়া, মাথা ব্যাথা, কাঁপুনি, শিহরণ, ক্লান্তি, শ্বাসপ্রণালীতে অনুপ্রবেশ ও মূত্রে রজের উপস্থিতির। সম্ভাব্য মারাত্মক পরিণতি: রক্তের উপাদান গুলাের পরিমাণ হ্রাস-বৃদ্ধি এবং হেপাটাইটিস হতে পারে।
এই ওষুধ গর্ভাবস্থায় ব্যবহারের জন্য সুপারিশ করা হয় না, যদি না ডাক্তার অপরিহার্য বলে মনে করেন। গর্ভাবস্থার তৃতীয় ট্রাইমস্টারে এই ঔষধ দেয়া যাবে না। NSAID’s খুব কম মাত্রায় মাতৃদুগ্ধে প্রদর্শিত হতে পারে। স্তন্যদানকালে NSAID’s, যদি সম্ভব হয়, এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
অ্যাজমা, ব্রাস্কোম্পাজম, রক্তপাত সমস্যা, হৃদসংবহনতন্ত্রের রােগ, পাকস্থলীর আলসার, উচ্চ রক্তচাপ, যকৃত সংক্রামণ, হৃদযন্ত্র বা বুকের ক্রিয়াকলাপে অসমকার্যকারিতা এবং বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ডিসউইরিয়া কমাতে পানি পান করা বা ডাজ কমানো যেতে পারে।
মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, বমি, এপিগ্যাস্ট্রিক ব্যথা, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল রক্তপাত, ডায়রিয়া, উত্তেজনা, কোমা, ঘুম ঘুম ভাব, মাথা ঘােরা, কানে ভোঁ ভোঁ শব্দ, মূর্ছা যাওয়া এবং খিচুনি হতে পারে। তীব্র বিষক্রিয়ার ক্ষেত্রে বৃক্ক বৈকল্য এবং যকৃতের ক্ষতি হতে পারে। রোগীদের উপসর্গ অনুসারে চিকিৎসা দিতে হবে।
Drugs used for Rheumatoid Arthritis, Non-steroidal Anti-inflammatory Drugs (NSAIDs), Other drugs for migraine
আলাে থেকে দূরে, শীতল ও শুকনাে স্থানে রাখুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।
সূত্র : Medex
Leave a Comment