১৯৭১ সালের ৫ ও ৬ জুলাই ভারতের শিলিগুড়িতে অনুষ্ঠিত একটি সম্মেলন গতিময় করেছিল মুক্তিযুদ্ধকে। এ নিয়ে বই প্রকাশ করেছে প্রথমা প্রকাশন। লেখক : মতিউর রহমান (সম্পাদক)। ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ রাজধানী ঢাকায় প্রথমা প্রকাশনের উদ্যোগে ১৯৭১: দ্য শিলিগুড়ি কনফারেন্স’ বইয়ের মােড়ক উন্মােচিত হয়।
শিলিগুড়ি কনফারেন্সের প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর তৎকালীন ব্রিগেডিয়ার অজিত কুমার মিত্র, যিনি এ কে মিত্র নামে পরিচিত। তিনি আর তার দুই সহযােগী মিলে শিলিগুড়ি কনফারেন্সে কথা বলেছিলেন মুক্তিযােদ্ধা, প্রবাসী সরকার ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে।
তাদের সঙ্গে আলােচনার পর এ কে মিত্র ও তাঁর দুই সহযােগী মিলে তৈরি করেন একটি দলিল। সেই দলিলের কথা এত দিন আড়ালেই ছিল। এ কে মিত্র মারা যান ২০০৪ সালে। তাঁর মৃত্যুর এক যুগের বেশি সময় পর পুরােনাে কাগজপত্র খুঁজতে গিয়ে সেই দলিল বা প্রতিবেদন খুঁজে পান তাঁর ছেলে দেবাশীষ মিত্র।
ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত ১১৯ পৃষ্ঠার এই বইয়ে স্থান। পেয়েছে সে সময়ের কাজের পরিকল্পনা, প্রথম গােপন বৈঠকের বর্ণনা। এর সঙ্গে রয়েছে আওয়ামী লীগের তৎকালীন নেতা মিজানুর রহমান চৌধুরীর বক্তব্য, লেফটেন্যান্ট কর্নেল কে এ মজুমদার এবং ক্যাপ্টেন এ ডি সার্ভের দেওয়া প্রতিবেদন।
১৯৭১ সালের ৫ ও ৬ জুলাই ভারতের শিলিগুড়িতে অনুষ্ঠিত কনফারেন্স ছিল মুক্তিযুদ্ধের মােড় ঘােরানাের মতাে ঘটনা। ১৯৭১ সালের মার্চে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর কিছুদিনের মধ্যেই মুক্তিযােদ্ধাদের প্রতিদিনের খাবার, ওষুধ জোগাড়সহ বিভিন্ন ধরনের চাহিদা বাড়তে থাকে।
একই সঙ্গে মুক্তিযােদ্ধাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং তা চালিয়ে নেওয়ার প্রয়ােজনীয়তাও বাড়ছিল। তখন শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়া নিয়েও চাপের মুখে পড়ে ভারত সরকার। এ রকম নানা কারণে যুদ্ধের গতি কিছুটা ধীর হতে শুরু করে। এ ছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ নিয়ে মতান্তর ঘটছিল প্রবাসী সরকারের মধ্যেও।
এমন একটি সময়ে অনুষ্ঠিত হয় শিলিগুড়ি সম্মেলন (কনফারেন্স), যেখানে অংশ নিয়েছিলেন প্রবাসী সরকারের সদস্য, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাসহ ৪০০ জন প্রতিনিধি। এ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে তৈরি হওয়া সমন্বয় গতিময় করেছিল মুক্তিযুদ্ধকে।
Leave a Comment