আমাদের সকল পোস্ট ও ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে পেতে ফলো করুন :

Click Here
সংস্থা পরিচিতি

ওপেক: Organization of Petroleum Exploration Corporation (OPEC)

প্রতিষ্ঠার সাল সেপ্টেম্বর ১৯৬০ (বাগদাদ, ইরাক)
প্রতিষ্ঠাতা আবদুল্লাহ তারিকি (সৌদি আরব), পাবলো পেরেজ আলফেনজো (ভেনিজুয়েলা)
সদর দপ্তরভিয়েনা, অস্ট্রিয়া
বর্তমান মহাসচিবহাইথাম আল-গাইস (কুয়েত)

পেট্রোলিয়াম বা তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোকে নিয়ে গঠিত আন্তঃসরকারি সংস্থা হচ্ছে Organization of Petroleum Exploration Corporation (OPEC) ওপেকভুক্ত দেশগুলো বিশ্বের তেলের রিজার্ভের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের অধিকারী এবং বৈশ্বিক তেল চাহিদার প্রায় দুই-পঞ্চমাংশ সরবরাহ করে। বিশ্বব্যাপী তেল বাজার নিয়ন্ত্রণে সংস্থাটি নেতৃস্থানীয় ভূমিকা রাখে।

এই বিভাগ থেকে আরো পড়ুন

গঠনের প্রেক্ষাপট

বিংশ শতাব্দীর বেশিরভাগ সময় জুড়ে বিশ্বের তেলের বাজার একচেটিয়াভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে সাতটি বড় পশ্চিমা তেল কোম্পানির এক জোট। এগুলোকে বলা হতো ‘সেভেন সিস্টার্স’। বিশ্বের ৮৫ শতাংশ তেলের রিজার্ভ ছিল এই রাষ্ট্রগুলোর নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু পঞ্চাশের দশক থেকে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো তেলের দাম নির্ধারণে তাদের অধিকার দাবি করে।

এই প্রেক্ষিতে ১৯৬০ সালের ১০ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর ইরাকে অনুষ্ঠিত বাগদাদ কনফারেন্স শেষে গঠিত হয় ‘ওপেক’। সংগঠনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৬১ সালে। প্রতিষ্ঠা-পরবর্তী প্রথম পাঁচ বছর সংগঠনের সদর দপ্তর ছিল সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়। ১৯৬৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর দপ্তরটি স্থানান্তরিত হয় অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় ।

লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

সংবিধি অনুসারে, সংস্থার লক্ষ্য হলো পেট্রোলিয়াম উৎপাদনকারী সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সমন্বিত পেট্রোলিয়াম নীতি প্রণয়ন। এর ফলে—

  • ন্যায্যমূল্য ও স্থিতিশীল তেলের বাজার নিশ্চিত করা যায়;
  • ভোক্তা দেশগুলোতে পেট্রোলিয়ামের দক্ষ ও নিয়মিত সরবরাহ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা যায়;
  • শিল্পে বিনিয়োগকারীদের জন্য মূলধনের ন্যায্য রিটার্ন নিশ্চিত করা যায়।

নিয়মিত ও জরুরি বৈঠক করে সারাবিশ্বে তেলের দাম ও উৎপাদন স্তরের নীতিগুলো সমন্বয় করা ওপেকের প্রধান কাজ।

সদস্য

তেলের বাজারের ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক’ হিসেবে পরিচিত ওপেকের বর্তমান সদস্য ১৩টি। ইরান, ইরাক, কুয়েত, সৌদি আরব ও ভেনিজুয়েলা প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য । অন্য সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে রয়েছে— অ্যাঙ্গোলা, আলজেরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, নাইজেরিয়া, লিবিয়া, গ্যাবন, নিরিক্ষীয় গিনি, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র। কানাডা, নরওয়ে, মিশর ও ওমান হলো পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র।

তেল নিষেধাজ্ঞা

১৯৭৩ সালের ১৭ অক্টোবর তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেক যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কিছু শিল্পোন্নত দেশের বিরুদ্ধে তেল নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ওপেকের অধিকাংশ সদস্যই ছিল আরব রাষ্ট্র। চতুর্থ আরব- ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েলকে সমর্থন করার প্রেক্ষিতে তারা এ ঘোষণা দেয়। ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পশ্চিম ইউরোপ ও জাপানে তেল সরবরাহ বন্ধ হয় যায়। সারাবিশ্বে শুরু হয় তেল সংকট। বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়ে যায় কয়েক গুণ। যার সুদুরপ্রসারী প্রভাব পড়ে বিশ্বরাজনীতি ও অর্থনীতিতে।

যত সম্মেলন

১৯৬৯ সালের ৩০ জুন থেকে ৫ জুলাই অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় প্রথম ওপেক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। উৎপাদনকারী ও ভোক্তা দেশগুলোর আন্তর্জাতিক তেল ও জ্বালানি নীতি নির্ধারণ ছিল এই বৈঠকের প্রধান আলোচ্য। একবিংশ শতাব্দীতে শুরু হয় ‘ওপেক ইন্টারন্যাশনাল সেমিনার সিরিজ। এই সিরিজের প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে। সর্বশেষ অষ্টম সেমিনারটি ২০২৩ সালের ৫ ও ৬ জুলাই অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় আয়োজিত হয়।

ওপেক তহবিল

সদস্য দেশগুলো ১৯৭৬ সালের ২৮ জানুয়ারি গঠন করে ‘ওপেক তহবিল’। খাদ্য, জ্বালানি, শিক্ষা, সুপেয় পানি ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবার মতো মৌলিক চাহিদা পূরণ করে আত্মনির্ভর ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা এই তহবিলের কেন্দ্রীয় লক্ষ্য। এটিরও সদর দপ্তর ভিয়েনায়।

ওপেক প্লাস

বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ২০১৬ সালের শেষে গঠিত হয় ‘ওপেক প্লাস’। ওপেকভুক্ত দেশগুলোর পাশাপাশি বিশ্বের শীর্ষ তেল উৎপাদনকারী অন্য কয়েকটি দেশ মিলে এটি গঠন করে। ওপেকের বাইরের এই দেশগুলো হলো : রাশিয়া, আজারবাইজান, বাহরাইন, ব্রুনাই, কাজাখস্তান, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, ওমান, রাশিয়া, দক্ষিণ সুদান ও সুদান।

বর্তমানে বিশ্বের তেল উৎপাদনের ৪০ শতাংশ ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলোর দখলে। তেল উৎপাদন ও সরবরাহের হ্রাস-বৃদ্ধির মাধ্যমে তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে বর্ধিত এই জোটভুক্ত দেশগুলো।

Md. Mahabub Alam

I am a committed educator, blogger and YouTuber and I am striving to achieve extraordinary success in my chosen field. After completing Masters in Anthropology from Jagannath University, I am working as Chief Accounts Officer in a national newspaper of the country. I really want your prayers and love.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button