রুশ সেনারা গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভােরে ইউক্রেন আক্রমণ শুরু করেছিলেন। এর মধ্য দিয়ে কয়েক দশকের মধ্যে ইউরােপে সবচেয়ে খারাপ সংঘাতের সূচনা হয়। ইতিমধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ১০০ দিন পার করেছে। দেখে নেওয়া যাক ১০০ দিনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাপ্রবাহ
২৬ ফেব্রুয়ারি : রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানিসহ পশ্চিমা দেশগুলাে নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা দিতে শুরু করে। বিভিন্ন দেশে রাশিয়ার জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
২৭ ফেব্রুয়ারি : পুতিন তাঁর দেশের পারমাণবিক শক্তিকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশ দেন এদিন। ইউক্রেন যুদ্ধে যাতে পশ্চিমারা না জড়ায়, তার সতর্কবার্তা হিসেবেই পুতিনের এ ঘােষণা।
২৮ ফেব্রুয়ারি : মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে প্রথম শান্তি আলােচনা শুরু হয়। রাশিয়া ক্রিমিয়ায় তাদের পূর্ণ সার্বভৌমত্ব দাবি করে। এ ছাড়া ইউক্রেন কখনাে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যােগ দেবে না, এমন শর্ত দেয়। এদিকে ২৮ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয় ফিফা ও উয়েফা। ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রাশিয়াকে সব ধরনের আন্তর্জাতিক প্রতিযােগিতা থেকে বহিষ্কার করে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা ও ইউরােপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা।
মার্চ ৩ : ইউক্রেনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় খেরসন শহরটি দখল করে নেন রুশ সেনারা। ওই দিনই মারিউপােলে গােলা নিক্ষেপ শুরু করেন।
মার্চ ১৬ : মারিউপােলের একটি থিয়েটারে বােমা হামলা চালান রুশ সেনারা। এতে সেখানে আশ্রয় নেওয়া কমপক্ষে ৩০০ ব্যক্তি নিহত হওয়ার দাবি করে কিয়েভ।
এপ্রিল ২-৩ : প্রায় এক মাসের যুদ্ধের পর উত্তর ইউক্রেন থেকে সরে এসে দক্ষিণাঞ্চল জয়ের দিকে মনােনিবেশ করার ঘােষণা দেয় মস্কো। এপ্রিল ২ ও ৩ তারিখে বুচা শহরে গণকবর পাওয়ার দাবি করে কিয়েভ। মস্কোর পক্ষ থেকে যুদ্ধাপরাধের অভিযােগ অস্বীকার করা হয়।
এপ্রিল ৮ : দনবাস অঞ্চল থেকে লােকজন সরিয়ে নিতে ক্রামাতােরস্কের একটি রেলস্টেশন ব্যবহার করা হচ্ছিল। সেখানে রুশ রকেট হামলার ঘটনা ঘটে। এতে কমপক্ষে ৫৭ জন নিহত হন।
এপ্রিল ১৪ : ইউক্রেনের নেপচুন ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার নৌবাহিনীর গর্বের প্রতীক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী মস্কোভা রণতরিতে আঘাত হানে। এতে কৃষ্ণসাগরে রণতরিটি ডুবে যায়। একে মস্কোর জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হয়।
মে ১১ : মার্কিন আইনপ্রণেতারা ইউক্রেনে সামরিক, অর্থনৈতিক ও মানবিক সাহায্য হিসেবে ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি সহায়তা কর্মসূচিতে সমর্থন দেন।
মে ১৮ : সুইডেন, ফিনল্যান্ড পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যুক্ত হওয়ার আবেদন জানায়।
মে ২১ : মারিউপােল লড়াইয়ের সমাপ্তি ঘটে। রাশিয়া মারিউপােল শহরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করে। সেখানকার আজভস্তাল ইস্পাত কারখানার নিচে লুকিয়ে থাকা ইউক্রেনীয় সেনারা আত্মসমর্পণ করেন। প্রায় ২ হাজার ৫০০ সেনাকে বন্দী করে নিয়ে যায় রাশিয়া।
মে ২৩ : ইউক্রেনের একটি আদালত ২১ বছর বয়সী এক রুশ সেনার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলার রায় দেন। ৬২ বছর বয়সী এক ইউক্রেনীয়কে গুলি করে হত্যা করায় ওই রুশ সেনার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মে ৩০ : ইইউ নেতারা নিষেধাজ্ঞার ষষ্ঠ ধাপের অংশ হিসেবে বেশির ভাগ রুশ তেল আমদানিতে আংশিক নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সম্মত হন।
মে ৩১ : ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ শহর সেভেরােদোনেৎস্কের কিছু এলাকা দখলে নেয়। রুশ বাহিনী। শহরটি দখলে নেওয়া হলে লুহানস্ক অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ রাশিয়ার কাছে চলে যাবে। ইউক্রেনের শিল্পাঞ্চলের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত দনবাসের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল লুহানস্ক।